১৮ মার্চ: ‘মুক্তি না আসা পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাও’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:১৪ এএম, ১৮ মার্চ ২০২২ শুক্রবার
১৮ মার্চ ভোর থেকে রাত পর্যন্ত জনতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনে ভিড় করে। বঙ্গবন্ধু সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে বারবার উঠে এসে সমবেত জনতার উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
বঙ্গবন্ধু বলেন, “তোমরা চরম প্রস্তুতি নিয়ে ঘরে ঘরে সংগ্রামী দুর্গ গড়ে তোল। যদি তোমাদের ওপর আঘাত আসে তা প্রতিহত করে শত্রুর ওপর পাল্টা আঘাত হানো। মুক্তি সংগ্রামের পতাকা আরও ওপরে তুলে ধরো। সাত কোটি শোষিত-বঞ্চিত বাঙালির সার্বিক মুক্তি না আসা পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাও।”
এদিন অনেক বিদেশি সাংবাদিকও বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আসেন। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আরও সৈন্য আনা হচ্ছে, সে সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু কিছু জানেন কিনা, বিদেশি এক সাংবাদিকের এ প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু বলেন, “আমার দেশের মাটিতে যা কিছু ঘটছে তার সব খবরই আমি রাখি।”
এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ওয়ালী ন্যাপ প্রধান ওয়ালী খান এক ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। সেখানে পাকিস্তান ন্যাপের সভাপতি গাউস বক্স বেজেঞ্জোও ছিলেন।
রাতে সরকারি ঘোষণা আসে, পরদিন বেলা ১১টায় প্রেসিডেন্ট ভবনে শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের মধ্যে তৃতীয় দফা আলোচনা হবে।
এদিন তেজগাঁওয়ে ও মহাখালীতে শ্রমিকদের ট্রাকে সেনাবাহিনীর হামলার ঘটা ঘটে। সেনারা নিরস্ত্রদের মারধর এবং তাদের টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিলে নগরীতে জনসাধারণের মধ্যে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
রাতে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম সংবাদপত্রে বিবৃতি দেন।
বাংলাদেশের জন্য খাদ্যশস্যবাহী ‘ইরনা এলিজাবেথ’ নামের একটি জাহাজের গতিপথ বদল করে চট্টগ্রাম থেকে করাচি নিয়ে যাওয়া হয়।
ঢাকায় বিমান বাহিনীর সাবেক বাঙালি সৈনিকরা স্বাধীনতার সংগ্রামের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে সংগ্রাম কমিটি গঠন করেন।
করাচিতে এক সংবাদ সম্মেলনে পিপলস পার্টি প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো জানান, ঢাকায় যেতে প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণ তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এদিন বিভিন্ন দেশের সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুদ্ধিজীবীদের কাছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির এক তারবার্তায় গণহত্যা ও যুদ্ধ থেকে পশ্চিম পাকিস্তানির নিবৃত্ত করার অনুরোধ জানানো হয়।
এসএ/