ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

চোখ ধাঁধানো পরিবর্তন আসছে ঢাবি ক্যাম্পাসে (ভিডিও)

মুহাম্মদ নূরন নবী

প্রকাশিত : ১২:০০ পিএম, ১৮ মার্চ ২০২২ শুক্রবার

বদলে যাচ্ছে শতবর্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। চূড়ান্ত বাস্তবায়নের পথে অবকাঠামোগত উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আশা, এতে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা যেমন বাড়বে, তেমনি গবেষণার গুণগত উৎকর্ষের পথও অবারিত হবে।

শতবর্ষে শিক্ষার পরিসর বেড়েছে দেশের শীর্ষ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু, বাস্তবতা হলো সেই অনুপাতে অবকাঠামোগত সুবিধা সু-পরিকল্পিতভাবে হয়নি কখনই। আবার ক্যাম্পাসে বহু ঐতিহাসিক স্থাপনা থাকায় চাইলেও হুট-হাট পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করা যায় না।

সংকট সমাধানে এবার বিস্তৃত উন্নয়নের পথে হাঁটছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট সকল দিক চুলচেরা বিশ্লেষণ-পরিকল্পনার পর অনেকটা আঁটঘাঁট বেঁধেই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হচ্ছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল বলেন, “আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক পরিসরে বিশ্বমানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে তুলে ধরতে চাই। সেসব বিবেচনায় রেখেই ২০৩০ সালের মধ্যে মাস্টারপ্ল্যানটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করেছি আমরা।”

দুই ধাপে এই উন্নয়নযজ্ঞ শেষ করার সময়সীমা ১৫ বছর। নতুন সু-উচ্চ ভবন যেমন নির্মাণ হবে, তেমনি পুরনো জরাজীর্ণ ভবনও সংস্কার হবে। বলা হচ্ছে, এক কথায় চোখ ধাঁধানো পরিবর্তন আসবে ক্যাম্পাসে। 

অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল আরও বলেন, “ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুশন এবং সাসটেনাবল ডেভেলপমেন্টের আলোকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমকে সাজাব। যাতে করে শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক পরিসরে তাদের অ্যাকসেস থাকে, তারা যেন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়ে চাকরির সুযোগ পায়।”

পরিকল্পনায় সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পাচ্ছে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার সেবার মান-উন্নয়ন। বিদ্যমান ঐতিহ্য বজায় রেখে ১২ তলা সু-উচ্চ ভবন নির্মাণ হবে। সাথে সাথে গ্রন্থাগারকে করা হবে ডিজিটালাইজও। 

এর পাশাপাশি ১৭টি একাডেমিক ভবন নির্মাণ হবে। আবাসন সংকটের সুরাহা করতে শিক্ষার্থীদের জন্য হবে ২৪টি নতুন হল। এতে ৮০ ভাগ আবাসিক হয়ে যাবে শতবর্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। 

ঢাবি উপ-উপাচার্য বলেন, “হল নির্মাণ করা হবে, যার ফলে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীর হলগুলোতে থাকার সুযোগ হবে।”

মহাপরিকল্পনায় আছে হাউজ টিউটরদের জন্য ২২টি, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ১২ এবং কর্মচারীদের জন্য ৯টি আবাসিক ভবনও।
 
অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল বলেন, “জড়াজীর্ণ হাইরাইজ বিল্ডিং অথবা মিডিয়াম রাইজ বিল্ডিং- এরকম প্রায় ৩শ’ ভবন ভেঙে ফেলার সুপারিশ করা হয়েছে। এখানে মোট ৯৬টি অবকাঠামো তৈরি করা হবে। এই বিল্ডিংগুলোর মধ্যে কোথাও কোথাও হাইরাইজ করা হবে।”

এছাড়াও হবে সবুজায়ন, খেলার মাঠের উন্নয়ন, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ আর বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ। শুধু তাই নয়, অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত জিমনেশিয়াম ও মেডিকেল সেন্টার এবং পার্কিং সুবিধাও বাদ যায়নি উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা থেকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩০০ একর জায়গা রয়েছে। এই মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হলে প্রায় ১৮ একর জায়গা নতুনভাবে সবুজায়ন হবে।”

এএইচ/