ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

যেভাবে বঙ্গমাতা ও পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার (ভিডিও)

মানিক শিকদার

প্রকাশিত : ১১:১০ এএম, ২০ মার্চ ২০২২ রবিবার | আপডেট: ১১:১৫ এএম, ২০ মার্চ ২০২২ রবিবার

একাত্তরের ২৫শে মার্চ রাতে স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার পর পরই বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয় জাতির পিতাকে। আর বঙ্গমাতা, বড় মেয়ে শেখ হাসিনাসহ পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যকে ধানমণ্ডির একটি বাড়িতে বন্দি করে রাখা হয়। পরাজিত পাক সেনার যখন বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের হত্যার ছক আঁকছিল তখনই মিত্র বাহিনীর যোদ্ধা মেজর অশোক তারা উদ্ধার করেন বঙ্গমাতা ও পরিবারের সদস্যদের। 

একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর। জয়বাংলা স্লোগানে মুখর সারাদেশ। চারদিকে লাল সবুজের জয়গান।

তখনও পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী বাংলাদেশের রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর ধানমণ্ডি ১৮ নম্বর সড়কের একটি বাড়িতে বন্দী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, শেখ রাসেল ও পরিবারের নতুন অতিথি সজীব ওয়াজেদ জয়। শেষ দুদিন তাদের খেতে পর্যন্ত দেয়া হয়নি।

খবর পেয়ে ১৭ ডিসেম্বর মিত্র বাহিনীর মেজর অশোক তারার নেতৃত্বে একটি দল বাড়িটিতে পৌঁছান। হানাদাররা বন্দুক তাঁক করে হুমকি দিতে শুরু করে। তাদের আক্রমণ করলে তারা বেগম মুজিবসহ অন্যদেরকে হত্যা করবে। বাস্তবতা বিবেচনায় মেজর তারা বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে মনস্তাত্বিক লড়াইয়ের পথ বেছে নেন। কৌশলে মুক্ত করেন বঙ্গমাতাসহ পরিবারের সদস্যদের।

১৮ নম্বর সড়কের বাড়িটিতে তখনও পাকিস্তানের পতাকা। মেজর তারা বাড়ির ছাদ থেকে পাকিস্তানের পতাকা ছুঁড়ে ফেলে বাংলাদেশের পতাকা উড়ান।

ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, “মেজর তারা প্রথমে এসে তিনি অস্ত্র ছাড়াই তাদের সামনে এগিয়ে গেছেন আলোচনা করার জন্য। বঙ্গমাতাও সেই সময় বলেছেন অস্ত্র সংবরণ কর। শেষ পর্যন্ত মেজর তারা নানান কৌশলে পাকিস্তানীদের আত্মসমর্পণ করাল।”

১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেজর অশোক তারাকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বঙ্গমাতাও মেজর তারার উপস্থিত বুদ্ধির প্রশংসা করেন।

অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, “বঙ্গমাতা মেজর তারাকে বলেছিলেন যে, তুমি আমার পোলা। কৌশলে উদ্ধার করার জন্য মেজর তারার কাছে বঙ্গমাতা ঋণী, আমরাও ঋণী।”

মুক্তিযুদ্ধে অনবদ্য অবদানের জন্য ২০১২ সালে মেজর অশোক তারাকে ফ্রেন্ড অব বাংলাদেশ পদক দিয়ে সম্মান জানায় সরকার। 

এএইচ/