মারিউপোলে রুশ হামলা: কিছুই আর অবশিষ্ট নেই
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৩৯ এএম, ২৩ মার্চ ২০২২ বুধবার
কিয়েভের বাইরে একটি শপিংমলে হামলার পরের দৃশ্য। ছবি-বিবিসি
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস বলেছেন, ইউক্রেনের মানুষ এখন নরক যন্ত্রণায় বাস করছে। কারণ দেশটির বহু শহরে গোলাবর্ষণ চলছে।
‘এই যুদ্ধ জয়যোগ্য নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেছে, “সহসাই এই যুদ্ধ শেষ হচ্ছে না।”
অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, “রাশিয়ান বাহিনী এক জায়গাতেই আটকে আছে।”
তবে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মারিউপোলে তীব্র লড়াই হচ্ছে এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট বলছেন যে, “রাশিয়ান হামলার পর সেখানে কার্যত আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।”
গত বুধবার ধ্বংস হওয়া একটি থিয়েটারের মধ্যে এখনো বহু বেসামরিক নাগরিক আটকে আছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে কৃষি শহর ভজনেসেনস্ক এবং এর একটি সেতুকে ঘিরে দু’দিন ধরে ব্যাপক লড়াই হয়েছে। এখানে জয়ের মাধ্যমেই রাশিয়ান বাহিনী দ্রুত কৃষ্ণসাগরের বড় বন্দর ওডেসা এবং একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হতে পারবে। তবে ইউক্রেনের সেনারা তীব্র প্রতিরোধ তৈরি করেছে এবং তারা একটি ব্রিজ উড়িয়ে দেয়ায় রাশিয়ানদের পিছু হটতে হয়েছে প্রায় একশ কিলোমিটার পর্যন্ত।
ওই লড়াইয়ের তিন সপ্তাহ পর ভজনেসেনস্কের মেয়র আবারো রাশিয়ান হামলা হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন। কারণ শহরটির যোদ্ধাদের হাতে পর্যাপ্ত অস্ত্র নেই।
তিনি বলেন, “শত্রুদের প্রতিরোধ করার মতো ভারী অস্ত্র তাদের হাতে আর নেই।”
রাশিয়ান ধনকূবের রোমান আব্রামোভিচের সঙ্গে যোগসূত্র আছে এমন দুটি সুপার ইয়াট তুরস্কের ডকে। এগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার বাইরে। কিন্তু এগুলো নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বড্রামে একটি সুপার ইয়ট থামানোর চেষ্টা করেছিলো একদল ইউক্রেনীয় তরুণ। আরেকটি ইয়ট আছে মারমারিসে।
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, এসব সুপার ইয়াট এখন তাদের টার্গেট এবং এ পর্যন্ত অন্তত আটটি তারা জব্দ করেছে। তবে অন্যগুলো এখন তাদের নাগালের বাইরে। কারণ মালদ্বীপের নিষেধাজ্ঞা থেকে নিরাপদ কিছু জায়গায় সেগুলো আছে।
অপরদিকে, ইউক্রেনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়া শরণার্থীদের জন্য বিশেষ কিছু পরিকল্পনা নিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, খুব শিগগিরই এ ঘোষণা আসতে পারে এবং এ পরিকল্পনার আওতায় ইউক্রেনের অধিকার কর্মী, সাংবাদিক ও সমকামী সম্প্রদায়ের মানুষজন থাকবেন। এর ফলে এসব মানুষেরা দ্রুততম সময়ে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, রাশিয়ান সেনারা গত সপ্তাহে বড় কোন সাফল্য দেখাতে পারেনি। ইন্সটিটিউট অফ স্টাডি অফ ওয়ার বলছেন, তারা বরং রক্ষণাত্মক অবস্থান আরও জোরদার করেছে।
প্রায় একই ধরণের তথ্য দিয়েছে আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা বলছে, রাশিয়ার সেনারা দরকারি রসদের অভাবে এক জায়গায় আটকে আছে।
ক্রেমলিন অবশ্য বরাবরই নিষেধাজ্ঞার প্রভাবকে গুরুত্ব দিতে রাজী নয়। তবে বেসামরিক এলাকাগুলোতে হামলা আরও জোরদার করেছে রাশিয়া।
ওদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, প্রায় এক লাখ মানুষ রাশিয়ার হামলার মধ্যেই মারিউপোলে অবস্থান করছে। এসব লোকেরা চরম মানবেতর অবস্থায় আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। যেখানে খাদ্য ও পানির তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি
এসএ/