লোমহর্ষক প্রামাণ্যচিত্র ‘গণফাঁসি ৭৭’ পুরস্কৃত
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:৫৪ পিএম, ২৩ মার্চ ২০২২ বুধবার | আপডেট: ০৩:৫৬ পিএম, ২৩ মার্চ ২০২২ বুধবার
মর্মান্তিক সত্য ঘটনাকে অবলম্বন করে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘গণফাঁসি ৭৭’। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আয়োজিত দশম লিবারেশন ডক ফেস্টে সেরা ছবি হিসেবে ইয়থ জুরি অ্যাওর্য়াড পেয়েছে ফুয়াদ চৌধুরী নির্মিত এই প্রামাণ্যচিত্র। সত্যকে তুলে ধরার এ প্রচেষ্টাটি এর মধ্য দিয়ে সফলতার স্বীকৃতি পেয়েছে। গত ১৫ মার্চ ঘোষণা করা হয় এই পুরস্কার।
১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ঢাকায় সামরিক বাহিনীর একটি অংশের অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সেনা ও বিমানবাহিনীর অনেক সদস্যকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল। তৎকালীন সেনাশাসক জেনারেল জিয়াউর রহমানের নির্দেশে গঠিত বিশেষ সামরিক ট্রাইবুনালের বিচারে অসংখ্য সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তাদের মধ্যে ১৯৩ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়। কিন্তু ওই ঘটনার জেরে মৃতের সংখ্যা আরো অনেক বেশি, তেমনি কারাদণ্ড ভোগ করেছিলেন অনেকেই। সেইসব রাতের নির্বিচার হত্যার লোমহর্ষক ইতিহাস নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘গণফাঁসি ৭৭’।
এই প্রামাণ্যচিত্রের নির্মাতা ফুয়াদ চৌধুরী বলেন, “১০/ ১১ বছর আগে কানাডায় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এর মিনিস্ট্রি সেক্রেটারি প্রথম আমাকে গণফাঁসি সম্পর্কে বলেন। ১৯৭৭ সালে যারা সিপাহি বিদ্রোহ করেছিলেন তাদের বিশেষ সামরিক ট্রাইবুনালের বিচার করা হয়। সেই ট্রাইবুনালে বিচারক হিসেবে কমিশন ও নন কমিশন অফিসাররা ছিলেন। তারা বিচার করেন এবং দ্রুত রায় দেন।”
মিনিস্ট্রি সেক্রেটারি আরো জানান, প্রতিদিন জিয়াউর রহমানের কাছে ফাঁসির অর্ডার নিয়ে গেলে তিনি সেখানে সাক্ষর করে দিতেন।
এ বিষয়ে নির্মাতা বলে, “এখনও প্রতি বছর ঢাকার প্রেস ক্লাবে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত সেনা সদস্যদের পরিবার মিলিত হন। গত বছর প্রেস ক্লাবে এমন কয়েকজনের পরিবারের সাথে দেখা হলে এই বিষয়ে তারা আরো অনেক তথ্য দেন। তাদের পরিবারের সদস্যরা জানান আমাদের বাবা/চাচাকে কি কারণে বা কোন অপরাদে ফাঁসি দেয়া হয় তা আমরা জানতে পারিনি। এমন কি তাদের কোথায়, কবে ফাঁসি হয় সেটাও জানা যায়নি। ফাঁসি দেয়ার পর আমরা সরকারি চিঠি পাই এবং তাদের কাপড়ের ব্যাগ জেলখানা থেকে ফেরত দেয়া হয়।”
তথ্য মতে, ঢাকায় আজিমপুরে ১২১টি কবর পাওয়া যায়, যার কোন পরিচয় নেই। তাদের পরিবারের সদস্যরা জানতে চাইলেন গণমাধ্যম এই বিষয়টা নিয়ে কিছু করবে কিনা। এই কারণেই ‘গণফাঁসি ৭৭’ প্রমাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন বলে জানিয়েছে এর নির্মাতা।
আরএমএ/