ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

ভার্চুয়ালেই সীমাবদ্ধ জাবির সুবর্ণজয়ন্তী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:১৬ পিএম, ২৩ মার্চ ২০২২ বুধবার

দেশের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হয় ২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি। করোনা পরিস্থিতির কারণে সীমিত পরিসরে অনলাইনেই উদযাপন করা হয় জাবির সুবর্ণজয়ন্তী। 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভাষ্যমতে, পরিকল্পনা থাকলেও করোনা ভাইরাস উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে জাঁকজমকপূর্ণ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন সম্ভব ছিল না। তবে পরবর্তীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমুহ খুলে দেয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আড়ম্বরপূর্ণভাবে ১ থেকে ১৬ ডিসেম্বর দীর্ঘ ১৬ দিনব্যাপী শতবর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সাম্প্রতিক সময়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ ও পরিসংখ্যান বিভাগও নিজস্ব উদ্যোগে জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে আয়োজন করে তাদের সুবর্ণজয়ন্তীর। 

‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী হিসেবে সুবর্ণজয়ন্তী পাওয়া বড়ই সৌভাগ্যের বিষয়। ভেবেছিলাম বর্ণিল-জাঁকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চাশবছর পূর্তি অনুষ্ঠিত হবে। শুনলাম, অনলাইনে স্বল্পপরিসরে আয়োজিত অনুষ্ঠানেই নাকি সুবর্ণজয়ন্তী পালনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে এই সংবাদ আমাকে প্রচণ্ড ব্যাথিত করেছে।’ বলছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাসান সজীব। সজীবের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন সকল স্তরের শিক্ষার্থীদের দাবি ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন হোক আড়ম্বর পূর্ণভাবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন থেকে শুরু করে খোদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি বিভাগ ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করে ফেললেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেনো সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম বলেন,‘ আমি রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত অবস্থায় কি কি করতে পারবো এ নিয়ে জানতে চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি, দায়িত্বের পরিধি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা না পেয়ে আমার পক্ষে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা সম্ভব নয়।’

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি বর্তমানে সহনীয় অবস্থায় এসেছে আমরা পর্যায়ক্রমে সকল কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করার চেষ্টা করছি এবং এরই ধারাবাহিকতায় সামনে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের প্রস্তুতি নেয়া হতে পারে।’

ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক ও পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আলমগীর কবির বলেন, ‘ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সহযোগি অংশ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুবর্ণজয়ন্তী পালনের কোনো উদ্যোগ নেয়া হলে আমরা তা সম্পাদনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো। তবে ব্যাক্তিগত ইচ্ছা থাকলেও আলাদা ভাবে আমরা এ বিষয়ে কিছু করতে পারি না।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় আছে নাকি তার আবার ৫০ বছর পূর্তি। ডিপার্টমেন্ট আছে দেখে ডিপার্টমেন্টের প্রোগ্রাম হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তো নেই বলে আমি মনে করি। আমরা এ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অবশ্যই অনুষ্ঠান করবো, এ বছরের ডিসেম্বরে। জুন-জুলাইতে আমেরিকায় হবে তারপর ইংল্যান্ডে এরপর আমরা দেশে অনুষ্ঠান করবো।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘একজন ছাত্র হিসেবে আমি আশা করি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন হোক। তবে এ উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চোখে পড়ার মত কোনো পদক্ষেপ আমরা পাইনি। যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকদিন ব্যাপী প্রোগ্রাম হয়েছে সেখানে আমরা একদিন ব্যাপীও কোনো প্রোগ্রাম করতে পারি নাই এটা আমাদের জন্যে লজ্জাজনক। আমি অবশ্যই আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুততম সময়ের মধ্যে ৫০ বছর পূর্তি উযাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
কেআই//