ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৭ ১৪৩১

মানুষের রক্তে পাওয়া গেল প্লাস্টিক কণা

একুশে টেলিভিশন  

প্রকাশিত : ০৮:৩৭ এএম, ২৫ মার্চ ২০২২ শুক্রবার

প্রথমবারের মতো মানুষের রক্তে প্লাস্টিকের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। পরীক্ষা করা প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষের রক্তে এই মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

দ্য গার্ডিয়ান জানায়, বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন যে, কণাগুলো মানুষের শরীরে চলাচল করতে পারে এবং বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে জমা হয়ে থাকতে পারে। তবে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাব কেমন হতে চলেছে তা এখনও জানা যায়নি। তবে এটি মানবকোষের ক্ষতি করে তা নিশ্চিত। 

গবেষকরা বলছেন, বায়ু দূষণের মাধ্যমে কণাগুলো শরীরে প্রবেশ করছে এবং এর ফলে বছরে কয়েক লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।

এছাড়া গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশে ফেলা হচ্ছে। মাউন্ট এভারেস্টের চূড়া থেকে গভীরতম মহাসাগর পর্যন্ত কোথায় নেই প্লাস্টিক?

মাইক্রোপ্লাস্টিক এখন পুরো পৃথিবীকেই দূষিত করছে। মানুষ ইতোমধ্যেই খাবার ও পানির পাশাপাশি নিশ্বাসের সঙ্গে ক্ষুদ্র কণাগুলো গ্রহণ করছে। শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের মলেও এই কণার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

গবেষণাটিতে বিজ্ঞানীরা ২২ জন অজ্ঞাত রক্তদাতার নমুনা বিশ্লেষণ করেছেন। তারা সবাই সুস্বাস্থ্যবান ও প্রাপ্তবয়স্ক।

গবেষণায় তাদের মধ্যে ১৭ জনের শরীরে প্লাস্টিকের কণা পাওয়া গেছে। অর্ধেক নমুনায় পিইটি প্লাস্টিক পাওয়া গেছে, যা সাধারণত পানীয়ের বোতলগুলোতে ব্যবহৃত হয়। এক-তৃতীয়াংশের নমুনায় পলিস্টাইরিন পাওয়া গেছে, যা খাবার ও অন্যান্য পণ্য প্যাকেজ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এছাড়া এক চতুর্থাংশ রক্তের নমুনায় পলিথিনের প্লাস্টিক কণা শনাক্ত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে নেদারল্যান্ডসের ভ্রিজ ইউনিভার্সিটি আমস্টারডামের ইকোটক্সিকোলজিস্ট অধ্যাপক ডিক ভেথাক বলেন, 'আমাদের রক্তে যে পলিমার কণা রয়েছে এটির প্রথম ইঙ্গিত হলো আমাদের এই গবেষণায়। এটি একটি যুগান্তকারী ফলাফল। তবে আমাদের গবেষণাকে প্রসারিত করতে হবে এবং নমুনার আকার, বাড়াতে হবে।'

কয়েকটি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আরও গবেষণা চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, 'এটি খুবই উদ্বেগজনক যে, মানুষের শরীরে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা রয়েছে এবং সারা শরীর জুড়ে সেগুলো চলাচল করছে।'

নতুন গবেষণাটি এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

আর এর আগের গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের মলে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ প্রায় ১০ গুণ বেশি। যেসব শিশুদের প্লাস্টিকের বোতলে খাওয়ানো হয় তাদের দেহে প্রতিদিনই কয়েক লাখ মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা প্রবেশ করছে,' বলেন তিনি।

গবেষণায় দেখা গেছে যে মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলি লোহিত রক্তকণিকার বাইরের ঝিল্লিতে আটকে যেতে পারে এবং অক্সিজেন পরিবহনের তাদের ক্ষমতা সীমিত করতে পারে। গর্ভবতী নারীর প্ল্যাসেন্টাতেও কণা পাওয়া গেছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

এসবি/