ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

‘সেচ না পেয়ে’ ২ কৃষকের বিষপান: আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩৬ পিএম, ২৬ মার্চ ২০২২ শনিবার | আপডেট: ০৮:৩৯ পিএম, ২৬ মার্চ ২০২২ শনিবার

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নিমঘটু গ্রামে ধনের জমিতে সেচের পানির জন্য বিষপানে দুই কৃষক মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা হয়েছে। শুক্রবার রাতে মৃত অভিনাথ মার্ডির স্ত্রী রোজিনা হেমরম বাদি হয়ে গোদাগাড়ী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। 

গোদাগাড়ী থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গভীর নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলার পর রাতে আসামীকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলানো হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি আগেই আত্মগোপন করেছে। তাকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ধানক্ষেতে সেচের পানি না পেয়ে গত বুধবার বিকেলে কৃষক অভিনাথ মার্ডি ও তার চাচাতো ভাই রবি মার্ডি বিষপান করেন। ওইদিন রাত ৯টার দিকে অভিনাথ মার্ডি মারা গেলে রাতেই রবি মার্ডিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত ৮টার দিকে রবি মার্ডি মারা যান।

গতকাল রাতে অভিনাথ মারানডির স্ত্রী রোজিনা হেমরম গোদাগাড়ী থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে গভীর নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ঘটনার দিন পুলিশ সাদা কাগজে রোজিনার সই নিয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছিল।

এদিকে, শুক্রবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও নিহত কৃষকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য এবং আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের আহবায়ক ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। এ সময় তিনি নিহতের পরিবারের পাশে তাকার আশ্বাস এবং তাদের সান্ত্বনা দেন।

পরে সাংসদ বাদশা সাংবাদিকদের বলেন, ১২ দিন ঘুরেও যখন ফসল রক্ষার জন্য অভিনাথ পানি পাননি, তখন তিনি অপারেটরকে বলেন, পানি না দিলে আমি কিন্তু বিষ খেয়ে মরে যাব। তারপরও অপারেটর বিষয়টি আমলে নেননি। এটা আত্মহত্যার প্ররোচনার মধ্যে পড়ে। তাই আমি নিজে থানায় গিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা রেকর্ড করার সঙ্গে সঙ্গে যেন গভীর নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয় সে জন্য পলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।  

সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা অভিযোগ করেন, বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গভীর নলকূপের পানি দেয়ার ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়। এ নিপীড়ন গোটা গোদাগাড়ী ও তানোর এলাকার। এ ব্যাপারে তিনি সরকার ও মানবাধিকার কমিশনসহ উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দাবি করেন।
কেআই//