চড় মারাই নয়, মাদকাসক্তি ও যৌনাচার নিয়েও বিতর্কিত ছিলেন স্মিথ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:২৯ পিএম, ২৮ মার্চ ২০২২ সোমবার | আপডেট: ০৩:৪৫ পিএম, ২৮ মার্চ ২০২২ সোমবার
ক্রিস রকের সঙ্গে উইল স্মিথের ঝামেলা মেটাতে পরিবারের মতো পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন পাফ ড্যাডি। হলিউডের সংবাদমাধ্যমের দাবি, অস্কারমঞ্চ কাঁপানো ওই চড়ের অভিঘাতে উইলও কম ভেঙে পড়েননি। বিজ্ঞাপন বিরতির সময় তাকে সামলাতে উঠে আসেন ডেনজেল ওয়াশিংটন এবং টেলর পেরিরা।
জেডাকে নিয়ে ক্রিসের চটুল মন্তব্যেই ক্ষেপে ওঠেন উইল। ‘জি আই জেন’ ছবির নায়িকা ডেমি মুরের আদলে ছোট করে ছাঁটা চুলের জেডাকে নিয়ে ক্রিসের রসিকতা যে সহ্য করতে পারেননি, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন উইল। অ্যালোপেসিয়ায় ভোগা জেডাকে নিয়ে মন্তব্যের পাল্টা হিসাবে চড় কষিয়েছেন ক্রিসকে।
তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও বহু বার বিতর্কে জড়িয়েছেন উইল। সে সময় অবশ্য বিতর্কের অনুঘটক হিসাবে ক্রিসের মতো কোনও কমেডিয়ানের মন্তব্যের প্রয়োজন ছিল না।
গত বছরই ক্রিসের আত্মজীবনী প্রকাশিত হয়েছে। ‘উইল’ নামে সে আত্মকথায় উইলের সঙ্গে কলম ধরছেন মার্ক ম্যানসনও। তাতেই নিজের জীবনের অজানা বহু কথায় বিতর্কে জড়িয়েছেন উইল।
জেডার সঙ্গে প্রায় ২৪ বছরের সম্পর্ক থেকে শুরু করে ছেলে জেডেন স্মিথের সম্পর্কে উইল নানা অজানা কথা জানিয়েছেন আত্মজীবনীতে। নিজের মানসিক অবস্থার বিষয়ে অকপটে জানিয়েছেন, কিশোর বয়সে আত্মহত্যার করার কথা ভাবতেন।
৫৩ বছরের অভিনেতার জীবনে খ্যাতি এসেছিল কম বয়সেই। ‘দ্য ফ্রেশ প্রিন্স অব বেল এয়ার’-এর মতো সিটকমে অভিনয়ের আগে হিপ হপ মিউজিকে মন দিয়েছিলেন ডিজে জ্যাজি জেফের সঙ্গে। কম বয়সেই দেখেছেন, বাবার হাতে হেনস্থার শিকার মা। পরিবার ছেড়ে মায়ের চলে যাওয়ায় তিনি যে ভেঙে পড়েছিলেন, তাও স্বীকার করেছেন উইল। জানিয়েছেন, পরিবারের এই সঙ্কটে আত্মহত্যাও করতে চেয়েছিলেন। সে সময় তার বয়স ১৩।
আত্মজীবনীতে উইল স্বীকার করেছেন, ১৯৯৩ সালে ‘সিক্স ডিগ্রিজ অব সেপারেশন’ ছবিতে কাজ করার সময় স্টকওয়ার্ড চ্যানিংয়ের উপর টান জন্মেছে। সে সময় প্রথম স্ত্রী শেরি জ্যাম্পিনোর সঙ্গে চুটিয়ে ঘর করছেন উইল।
যে জেডাকে ঘিরে মন্তব্যের পর ক্রিসের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন উইল, তার সঙ্গে সম্পর্ক মসৃণ ছিল না। ২০১৬ সালে আলাদা থাকতে শুরু করেছিলেন। এমনকি, আত্মজীবনীর পাতায় স্ত্রীর সঙ্গে টুপাক শাকুরকে নিয়ে তার বিশ্বাসহীনতার কথাও জানিয়েছেন।
আমেরিকান র্যাপার টুপাকের সঙ্গে জেডার ঘনিষ্ঠতা যে মেনে নিতে পারেননি, তাও স্বীকার করেছেন উইল। যদিও টুপাক এবং জেডা একসঙ্গে বড় হওয়ায় তাদের ঘনিষ্ঠতা যে স্বাভাবিক, তা জানিয়েছেন উইল। টুপাকের খ্যাতির কথা উল্লেখ করে উইল বলেছিলেন, ‘‘আমাদের সম্পর্কের গোড়ায় সব সময় মনে হত তাঁদের কথা। ও ছিল প্যাক। আর আমি তো আমিই।’’
নিজের মতো ছেলে জেডেনও কম বয়সে পা রেখেছেন হলিউডে। তবে ছেলের সঙ্গে তার সম্পর্কও যে সহজ ছিল না, তেমন ইঙ্গিত দিয়েছেন উইল। ১৫ বছর বয়সে মা-বাবার শাসনমুক্ত হতে চেয়েছিলেন জেডেন।
২০১৩ সালে ‘আফটার আর্থ’ ছবিতে জেডেনের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল উইলকে। বাবা-ছেলের জুটির বহু প্রতীক্ষিত সে ছবি অবশ্য বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। সমালোচকেরা অখুশি ছিলেন বলে সাফ জানিয়েছিলেন। উইল জানিয়েছেন, এক দিকে বক্স অফিসে ব্যর্থতা। অন্য দিকে, ছেলের আলাদা হওয়ার অনুরোধে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।
উইলের জীবনে আরও বহু কাণ্ডে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ২০১১ সালে শোনা গিয়েছিল, জেডার সঙ্গে আলাদা থাকতে শুরু করেছেন উইল। সে সময় মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। সেই সঙ্গে তন্ত্রনির্ভর যৌনাচারেও লিপ্ত হতে শুরু করেছিলেন। এ সবই জানিয়েছেন আত্মকথায়।
হলিউডের অন্যতম সুখী দম্পতি বলে পরিচিত উইল এবং জেডা। তবে ২০১১ সালে তিনি যে মাদকে আচ্ছন্ন থাকতেন, তা জানিয়েছেন আত্মজীবনীতে। দু’বছরে চোদ্দো বার সেই কড়া মাদক নিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। এমনকি, যৌনচারের জন্য এক তান্ত্রিক সেক্স বিশেষজ্ঞের কাছেও নাকি গিয়েছিলেন।
এখানেই বিতর্ক থামেনি। গত বছর উইল বলে বসেন, নিজেদের সম্পর্কে খুবই খোলামেলা তারা। এমনকি, বিবাহিত অবস্থায় থাকাকালীন দু’জনেই অন্য সম্পর্কে জড়িয়েছেন। বিয়ে মানেই যে জেলখানায় থাকা নয়, তা-ও বলেছিলেন উইল। এমনকি, তাদের দু’জনেই নাকি ইচ্ছে ছিল একটি হারেম রাখার। নিজের হারেমে হ্যালি বেরি এবং মিস্টি কোপল্যান্ডের মতো অভিনেতাদের রাখারও তাঁর স্বপ্ন বলে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন উইল।
এসবি/