কোনো কাজই আসছে না ডিজিটাল নম্বরপ্লেট (ভিডিও)
রাসেল খান
প্রকাশিত : ১১:৪৩ এএম, ৩১ মার্চ ২০২২ বৃহস্পতিবার
একযুগেও ডিজিটাল নম্বরপ্লেটের সুফল ভোগ করতে পারছেন না গাড়ির মালিকরা। চুরি হওয়া গাড়ি উদ্ধার, গাড়ি শনাক্তকরণ এমনকি দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানসহ কোনো কাজই আসছে না রেট্রো রিফেক্টিব নম্বরপ্লেট আর রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন- আরএফআইডি স্টিকার প্রকল্প।
গাড়ি চুরি রোধ ও চুরি গেলেও দ্রুত খুঁজে বের করা, টোল আদায়, যানজট এড়ানো, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান, সড়ক আইন অমান্য হলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে আইনি ব্যবস্থা নেয়াসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ২০১২ সালে ডিজিটাল নম্বরপ্লেট ও আরএফআইডি বসানোর প্রকল্প হাতে নেয় বিআরটিএ।
প্রকল্পের আওতায় গাড়ির অবস্থান শনাক্তে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ১২টি স্থানে আরএফআইডি স্টেশন বা টাওয়ার স্থাপিত হয়। তবে, ঢাকার বাইরে এ স্টেশন না থাকায় প্রকল্পের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
নম্বরপ্লেট ফি হিসেবে মোটরসাইকেল প্রতি দুই হাজার ২৬০ টাকা আর প্রাইভেটকার ও গণপরিবহন প্রতি চার হাজার ৬২৮ টাকা নিচ্ছে বিআরটিএ। এই হিসাবে গেল বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সাড়ে ৩৮ লাখেরও বেশি গাড়ি মালিকের পকেট থেকে গেছে প্রায় এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
কিন্তু বাস্তবে এর কোনো সুফলই ভোগ করতে পারছেন না কেউই।
এক মালিক বলেন, “নাম্বারটা ট্রাকিং করলে বুঝা যাবে আমার গাড়িটা কোন জায়গায় অবস্থান করছে। তবে ডিজিটাল কেন বলছে, এটা তো ডিজিটাল নয় অ্যানালক। যদি সেই সুবিধাটাই না থাকে।”
পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বিপুল ব্যয়ের এই প্রকল্পের সুফল ভোগ করতে না পারায় দায়ী করছেন বিআরটিএকে।
পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ হাদিউজ্জামান বলেন, “ট্রাফিক বিভাগের একটা প্রকল্প রয়েছে, ঢাকা শহরে বেশ কিছু সিসিটিভি তারা বসিয়েছে। আমি মনে করি, এই সিসিটিভির কাজ শুধু ম্যানুয়ালি গাড়িকে ট্রাক করা নয়, এই সিসিটিভির ইমেজ যদি ডিজিটাল লাইসেন্স প্যাকে নিতে পারি তাহলে সুফল পাওয়া যাবে। পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশকে অবশ্যই আরএফআইডির রিড করার জন্য যে ম্যাকানিজম থাকার কথা এটা তাদেরকে দিতে হবে।”
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বিআরটিএর এই কর্মকর্তা বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফল ভোগ করতে আরও সময় লাগবে।
বিআরটিএ পরিচালক (রোড সেফটি) এসকে মো. মাহবুব-ই-রাব্বানী বলেন, “এই টেকনোলজির মাধ্যমে গাড়ি কোথায় আছে এটা বের করা যাবে এটা কোথাও নেই। অন্যান্য দেশে যেটা প্রবর্তন করা হয়েছে সেখানেও এইভাবে কাজ করে। একেক গাড়ির একক ধরনের নাম্বার প্লেট থাকবে, একেক ডিজাইনের, একেক রংয়ের নাম্বার প্লেট থাকবে এটা তো ঠিক নয়।”
তবে সঠিক পরিকল্পনা ও বিআরটিএর জবাবদিহিতা না থাকায় প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই।
এএইচ/