ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

নিলামে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার তরঙ্গ বিক্রি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৪০ পিএম, ৩১ মার্চ ২০২২ বৃহস্পতিবার

দেশের চার মোবাইল অপারেটরের কাছে ১০ হাজার ৫৪৫ কোটি ৭০ হাজার টাকার পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক তথা ফাইভ-জি’র তরঙ্গ বিক্রি করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসি।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর একটি হোটেলে এ নিলাম শুরুর পর আধা ঘণ্টার মধ্যে ২ দশমিক ৩ গিগাহার্টজ এবং ২ দশমিক ৬ গিগাহার্টজ ব্যান্ডের ১৯০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বিক্রি হয়ে যায়। তবে ২ দশমিক ৩ গিগাহার্টজ ব্যান্ডের ৩০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ অবিক্রিতই থাকে।

দশ মেগাহার্টজের এক একটি ব্লক ধরে এ নিলামে ২ দশমিক ৩ গিগাহার্টজ ব্যান্ডে ১০টি এবং ২ দশমিক ৬ গিগাহার্টজ ব্যান্ডে ১২টি ব্লকের ওপর ডাক দেওয়ার সুযোগ ছিল। প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের ভিত্তিমূল্য ছিল ১৫ বছরের জন্য ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, তবে শেষ পর্যন্ত তা ৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়েছে।

গ্রাহক সংখ্যার দিক দিয়ে দেশের শীর্ষ দুই মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবি ২ দশমিক ৬ গিগাহার্টজ ব্যান্ডের ৬০ মেগাহার্টজ করে ১২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনে নেয়।

আর বাংলালিংক ২ দশমিক ৩ গিগাহার্টজ ব্যান্ডের ৪০ মেগাহার্টজ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত অপারেটর টেলিটক একই ব্যান্ডের ৩০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কেনে।

সবচেয়ে বড় অপারেটর গ্রামীণফোনের হাতে এতদিন মোট ৪৭ দশমিক ৪০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ছিল। নতুন তরঙ্গ মিলিয়ে তাদের হাতে মোট তরঙ্গের পরিমাণ দাঁড়াবে ১০৭ দশমিক ৪০ মেগাহার্টজ। তরঙ্গ মালিকানার দিক দিয়ে গ্রামীণফোনই দেশে শীর্ষে থাকবে। 

এছাড়া রবি ১০৪ মেগাহার্টজ, বাংলালিংক ৮০ মেগাহার্টজ এবং টেলিটক ৫৫ দশমিক ২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ব্যবহার করতে পারবে।  

দেশের ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে বেশি পরিমাণ তরঙ্গের নিলাম হল, যেখানে ফোর জির পাশাপাশি ফাইভ জি নেটওয়ার্ক চালুর জন্য তরঙ্গ বিক্রি হল।  

নিলাম শেষে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান, নতুন করে তরঙ্গ বরাদ্দ নেওয়ার পর দেশের মোবাইল অপারেটরগুলো তাদের সেবার মান আরও বাড়াতে পারবে বলে তিনি আশা করছেন।

“অপারেটরগুলোর গুণগত মানের একটা অংশ স্পেকট্রাম পূরণ করবে। তবে অপারেটরদের ফাইবার অ্যাক্টিভিটিও বাড়াতে হবে।”

এ নিলামের মাধ্যমে যে আয় হল, তা জাতীয় উন্নয়নে বড় ভূমিকা পালন করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।  

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, “ছয়টি ব্লকের বেশি বেতার তরঙ্গ না নেওয়ার বাধ্যবাধকতার কারণে গ্রামীণফোন ও রবি অবিক্রিত ব্লকগুলো নিতে পারেনি। আমি তাদের হয়ে বিটিআরসিকে বলব, এই তরঙ্গগুলো তারা যদি নিতে চায়, তাহলে তাদের যেন একই দামে সেগুলো দিয়ে দেওয়া হয়।
“কেননা আমাদের লক্ষ্য হল মোবাইল অপারেটরগুলোর সেবার মান নিশ্চিত করা। তারা যেন জনসাধারণকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে পারে।” 

পরে সংবাদ সম্মেলনে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার জানান, তাদের নিলাম ‘সফল’ হয়েছে।

তিনি বলেন, “আমরা ৮৬ শতাংশ বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছি। ২২০ মেগাহার্টজের মধ্যে ১৯০ মেগাহার্টজ বিক্রি হয়েছে। ৩০ মেগাহার্টজ আমাদের হাতে থেকে গেছে। আমরা প্রত্যাশার কাছাকাছি গিয়েছি।”

বেতার তরঙ্গের মোট ক্রয়মূল্যের ১০ শতাংশ নিলামের চূড়ান্ত ফল ঘোষণার ৬০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে এবং বাকি ৯০ শতাংশ ৯ বছরে সমান কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবে অপারেটররা।

এমএম/