ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বাভুমার প্রতিরোধে বড় লক্ষ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৫৮ পিএম, ৩১ মার্চ ২০২২ বৃহস্পতিবার

নিজের ৫০তম ম্যাচে পঞ্চাশ করে অপরাজিত বাভুমা আশা দেখাচ্ছেন স্বাগতিকদের

নিজের ৫০তম ম্যাচে পঞ্চাশ করে অপরাজিত বাভুমা আশা দেখাচ্ছেন স্বাগতিকদের

ডারবানে প্রথম টেস্টের প্রথম সেশনে ছড়ি ঘুরিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। পরের দুই সেশনেই ঘুরে দাঁড়িয়ে আধিপত্য বিস্তার করেছে বাংলাদেশ। তিন উইকেট হারিয়ে তৃতীয় সেশন শুরু করা দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ সেশনের শুরুতেও ছিল নড়বড়ে। হারিয়েছে অভিষেক করা রায়ান রিকেলটনের উইকেট।

তবে একপ্রান্ত আগলে প্রতিরোধ গড়েছেন টেম্বা বাভুমা। তুলে নিয়েছেন ফিফটিও। সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে কাইল ভেরেইন্নের সঙ্গে গড়েছেন ৫৩ রানের হার না মানা জুটি। যে জুটিতে ভর করে প্রথম দিনের খেলা শেষে ৭৬ ওভারে প্রোটিয়াদের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৪ উইকেটে ২৩১ রান। 

ওয়ানডে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ৫২ রানে এবং তার সঙ্গী কাইল ভেরেইন্নে ২৭ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। দ্বিতীয় দিনে এই দুজনে কোথায় গিয়ে থামেন, সেটাই দেখার বিষয়।

অথচ ডারবানে টস জিতে যে আশায় বাংলাদেশ বোলিং নিয়েছিল, প্রথম সেশনটায় তার ছিটেফোঁটাও দেখাতে পারেনি বোলাররা। তবে দ্বিতীয় সেশনে খালেদ আহমেদের হাত ধরেই আসে প্রথম সাফল্য।

এবাদত কয়েকবার দারুণ লেংথে বল করে প্রোটিয়াদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করলেও সাফল্য পাননি। দ্বিতীয় সেশনে কয়েক ওভার বোলিং করার পর তাকে রিপ্লেস করা খালেদ আহমেদ ফেরান প্রোটিয়া অধিনায়ক ডিন এলগারকে। 

খালেদের বাড়তি বাউন্সের বলটা হালকা সুইং করেছিল। এলগার তা বুঝতেই পারেননি! ফলাফল বল ব্যাটের কানায় লেগে জমা পড়ে লিটন দাসের গ্লাভসে। ১০১ বল খেলা প্রোটিয়া অধিনায়ক ফিরেছেন ৬৭ রান করে। তার ইনিংসে ছিল ১১টি চারের মার। সেইসঙ্গে ভাঙে ১১৩ রানের প্রথম জুটিটাও।

উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পরই ফেরেন সারেল এরউয়িও। তার দুর্ভাগ্যই বলতে হবে! মিরাজের বেশ বাইরের বল খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন এই ওপেনার। ১০২ বলে এরউয়ি করেন ৪১ রান।

হঠাৎ এই ছন্দ পতনের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছিলেন প্রোটিয়া দুই ব্যাটার কিগান পিটারসেন ও টেম্বা বাভুমা। থিতু হওয়ার চেষ্টা করছিলেন দুজনেই। এই সময় দ্রুত রান নেয়ার তাড়া দেখাতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন তারা। 

তাসকিনের করা বলটি বাভুমা পয়েন্টে ঠেলে সিঙ্গেল নিতে গেলে মিরাজের অসাধারণ ফিল্ডিং ও থ্রোতে রানআউট হয়েছেন পিটারসেন। ডিরেক্ট হিটে ১৯ রানে থেমেছে এই ব্যাটারের ইনিংস।

টেম্বা বাভুমা অবশ্য এক প্রান্ত আগলেই খেলেছেন। নতুন ব্যাটার রায়ান রিকেলটনকে সঙ্গে নিয়ে ভালো কিছুর সম্ভাবনা তৈরী করলেও এই জুটি স্থায়ী হয়নি। দারুণ বোলিং করা এবাদত হোসাইনের শিকারে ভাঙে দুজনের ৩৪ রানের জুটি। 

অফস্টাম্পের বাইরের বল টেনে পুল করতে গিয়েছিলেন অভিষিক্ত রিকেলটন। বল টপ এজ হয়ে জমা পড়ে মিড অনে থাকা মোমিনুল হকের হাতে। তাতে ৪১ বলে ২১ রানে শেষ হয় প্রথম টেস্ট খেলতে নামা এই ব্যাটারের ইনিংস। যাতে ১৮০ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

এর আগে প্রথম সেশনটা ভালো কাটনি বাংলাদেশের। লাঞ্চের আগের সময়টা ছিল শুধুই দক্ষিণ আফ্রিকার। বাংলাদেশের বোলারদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছেন দুই ওপেনার ডিন এলগার ও সারেল এরউয়ি। যার ফলে ওই সেশনে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ছিল ২৫ ওভারে বিনা উইকেটে ৯৫ রান।

এর আগে ডারবানের কিংসমিডে টস জিতলেও ব্যাটিং নেননি টাইগার অধিনায়ক মোমিনুল হক। টেস্ট ম্যাচে এমনিতেই চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিংয়ের চ্যালেঞ্জে কেউ নিতে চায় না। তবে বাংলাদেশ দল চ্যালেঞ্জটা নিয়েছে হয়তো শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চেপে ধরার প্রত্যাশা থেকে। মোমিনুল বাহিনী এখন সেই সুযোগটা কতটা কাজে লাগাতে পারে, সেটাই দেখার।

এদিকে, এর আগে ২০০২, ২০০৮ ও ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করে বাংলাদেশ। সেই তিন সফরের ছয় টেস্টের পাঁচটিতেই বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ব্যবধানে। অন্যটিতে হার ৩৩৩ রানের ব্যবধানে। সাদা পোশাকে অন্য বড় দলগুলোর বিপক্ষে কিছুটা লড়াই করলেও প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বারবারই আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে।

তবে এবারের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রথমবার কোনো ম্যাচ জয়ের সঙ্গে রঙিন পোশাকে সিরিজও জয় করেছে বাংলাদেশ দল। তাই এটাকে প্রেরণা হিসেবে নিয়ে টেস্টেও ভালো করার আত্মবিশ্বাস টাইগারদের চোখেমুখে। সঙ্গে আছে কিউয়িদের বিপক্ষে পাওয়া তাদের মাটিতে পাওয়া টেস্ট জয়ের মধুর স্মৃতিও। 

তাইতো ভালো কিছুর প্রত্যাশা করতেই পারে মোমিনুল বাহিনী। ডারবান টেস্টের দ্বিতীয় দিনে তারই বাস্তবায়ন দেখার অপেক্ষায় ১৬ কোটি টাইগারভক্ত।

এনএস//