ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ

নৃশংসতার আরো প্রমাণ হাজির ইউক্রেনের, রাশিয়ার দাবি সব `বানোয়াট`

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:০৩ পিএম, ৪ এপ্রিল ২০২২ সোমবার

বুচা সহ কিয়েভের আশপাশের শহর, গ্রাম থেকে রুশ সৈন্য প্রত্যাহারের পর শনিবার থেকে বেসামরিক লোকজনের মরদেহ এবং গণকবরের যেসব ছবি, ফুটেজ ইউক্রেনের পক্ষ থেকে দেয়া হচ্ছে, তা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোতে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

রাশিয়ার ওপর আরো শক্ত নিষেধাজ্ঞা এবং ইউক্রেনকে আরো সামরিক সহযোগিতা দেওয়ার কথা বলছেন পশ্চিমা নেতারা।

ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ - যিনি যুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই নিয়মিত প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছেন- তিনিও বলেছেন রুশ সৈন্যরা যে গণহত্যা করেছে তার প্রমাণ দেখা যাচ্ছে।

ইউক্রেনে বেসামরিক লোকজন হত্যার সর্বশেষ প্রামাণ্য তথ্যটি পাঠিয়েছেন বিবিসির সংবাদদাতা ইয়োগিতা লিমাই।

তিনি বলছেন কিয়েভের কাছে মোটিঝিন নামে একটি গ্রামে গেলে তাকে মাটির অল্প নীচে চাপা দেওয়া চারটি মৃতদেহ দেখানো হয় যাদের তিনজনই একই পরিবারের।

তাকে জানানো হয় মৃত ঐ তিনজন হচ্ছেন- গ্রামের প্রশাসনিক প্রধান ওহলা সোনেনকো (জন্ম ১৯৭১ সাল), তার স্বামী ইগর যিনি বয়সে স্ত্রীর চেয়ে পাঁচ বছরের বড় এবং তাদের এক ছেলে ওলেক্সান্ডার (জন্ম ১৯৯৬)।

কাছের গ্রাম মাকারিভের প্রধান ভাদিম তোকার সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম টেলিগ্রামে লিখেছেন ঐ তিনজনকে ১০ দিন আগে রুশ সৈন্যরা অপহরণ করেছিল।

অভিযোগ করা হয়েছে যে রুশ সৈন্যরা ওলহা সোনেনকোর বাড়িতে তল্লাশির সময় একটি গাড়িও নিয়ে গিয়েছিল।

"তারা (রুশ সৈন্যরা) শুধু ওলহাকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল, কিন্তু তার স্বামী জোর করেন তাকেও স্ত্রীর সাথে নিয়ে যেতে হবে। ছয় ঘণ্টা তাদের ছেলেকেও নিয়ে যাওয়া হয়," কিয়েভ আঞ্চলিক পরিষদের ডেপুটি প্রধান তেতিয়ানা সেমেনোভাকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন ইউক্রেনিয়ান মিডিয়া লিখেছে।

ইউক্রেনের সরকার বলছে বুচা শহরে তারা ২০টি মৃতদেহ পেয়েছে যাদের পরনে ছিল বেসামরিক পোশাক।

বুচায় সফরে গিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সোমবার বলেছেন রুশ সৈন্যদের "নৃশংসতার" যে প্রমাণ দেখা যাচ্ছে তাতে রাশিয়ার সাথে শান্তি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।

তবে রাশিয়া আজ (সোমবার) আবারও বলেছে এসব হত্যা এবং নৃশংসতার এসব অভিযোগ সব "ভুয়া" এবং "সাজানো।"

রুশ বার্তা সংস্থা তাস রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভকে উদ্ধৃত করে বলেছে কিয়েভের আশপাশ থেকে রুশ সৈন্য প্রত্যাহারের কয়েকদিন পর এসব নৃশংস ঘটনা সাজানো হয়েছে।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন "আমরা এসব অভিযোগ পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করছি।"

তিনি বলেন, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞরা "এসব ভুয়া ভিডিও এবং আরো অনেক ভুয়া কনটেন্ট শনাক্ত করেছে।"

রোববার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে বুচার একজন বেসামরিক বাসিন্দাও রুশ সৈন্যদের নির্যাতনের শিকার হয়নি। তারা আরো বলে যে ৩০শে মার্চ রুশ সৈন্যরা বুচা থেকে চলে আসে, এবং তার চারদিন পর এসব ফুটেজ, ছবি প্রমাণ হিসাবে হাজির করা হচ্ছে।

রাশিয়া আরো অভিযোগ করেছে যুদ্ধাপরাধের এসব অভিযোগ নিয়ে আলোচনার জন্য নিরাপত্তা পরিষদে একটি বৈঠকের জন্য মস্কো প্রস্তাব দিলেও পরিষদের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ব্রিটেন তা করতে দেয়নি।
কেআই//