ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

ধর্ষণের ঘটনা টাকায় মীমাংসা, এসআই ক্লোজড

সাভার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:১৬ এএম, ১৩ এপ্রিল ২০২২ বুধবার

আশুলিয়ায় ধর্ষণের একটি ঘটনা থানায় বসে আড়াই লাখ টাকায় আপস-মীমাংসা করে দেন পুলিশের এক এসআই। পরে ওই ভুক্তভোগী নারীকে থানায় ডেকে নিয়ে মামলার নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, এ ঘটনায় মো. ফরিদুল আলম নামের পুলিশের ওই এসআইকে আশুলিয়া থানা থেকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। 

এর আগে আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকায় স্থানীয় সাকিব ভূইয়ার (২৮) বিরুদ্ধে এক পোশাক শ্রমিককে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে। অভিযুক্ত সাকিব ভুইয়া ঘোষবাগে ইলেকট্রনিক্স ও ফার্নিচারের ব্যবসায়ী।

ভুক্তভোগী ওই পোশাক শ্রমিক আশুলিয়া থানায় সাকিবের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করলে সেই অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব পরে এসআই মো. ফরিদুল আলমের উপর। ঘটনাটি থানায় বসে আড়াই লাখ টাকায় মিমাংসা করে দেন তিনি।

পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে সোমবার মামলা গ্রহণ করে আশুলিয়া থানা পুলিশ। মামলা নং-২৮। ওই দিনই অভিযুক্ত সাকিব ভূঁইয়াকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী বলেন, এর আগেই এ ঘটনা মীমাংসা করা হয়েছিল। এসআই ফরিদ ও আরও কয়েকজন স্থানীয় লোক থানায় বসেই আমাকে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে মীমাংসা করায়। এ বিষয়ে আমার কোন অভিযোগও ছিলনা। এরপর থেকে আমি আমার মত এলাকায় বসবাস করে আসছিলাম। পারিপার্শ্বিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে আমি এ বিষয়ে আর কোন পদক্ষেপ নিতে চাইনি।

কিন্তু হঠাৎ করে এসআই ফরিদ আমাকে ফোন দিয়ে বলে, বোন আমার চাকরিটা বাঁচাও। তুমি থানায় এসে একটা স্টেটমেন্ট দিয়ে যাও। পরে আমাকে থানায় নিয়ে মামলা গ্রহণ করে, জানান ওই নারী।

এ অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা দাবি করে মঙ্গলবার এসআই ফরিদুল আলম বলেন, আজ থেকে আমি পুলিশ লাইনে সংযুক্ত আছি। ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আমি, টাকা-পয়সা নিয়ে কোন মীমাংসা করা হয়নি। 

তাহলে কেন আপনাকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমার সিনিয়র কর্মকর্তারা বলতে পারবেন।

এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, যেকোন সময় যেকোন পুলিশ বদলী বা ট্রান্সফার হতে পারেন। এ বদলী শাস্তিমূলক কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না তো এটা শাস্তিমূলক বিষয় না। এটা অভ্যন্তরীণ বিষয়।

ভুক্তভোগীর এজাহার থেকে জানা যায়, গত ৩-৪ মাস আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে তাদের মধ্যে। পরে বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে বিয়ের কথা বললে টালবাহানা করে ঘুরাতে থাকেন ওই ব্যবসায়ী যুবক।

এএইচ/