সরকারি জমি বন্ধক রেখে ১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:০৫ পিএম, ১৫ এপ্রিল ২০২২ শুক্রবার
মহাসড়কের জমি ব্যাংকে বন্ধক রেখে ১৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া মো. গোলাম ফারুক (৫০) নামের এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র্যাব। ব্যাংক ঋণ নিতে অভিনব প্রতারণার কৌশল অবলম্বন করেছেন গোলাম ফারুক ও তার এক সহযোগী ফিরোজ আল মামুন।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) রাজধানীর উত্তরা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর কাওরান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের প্রতারণার সঙ্গে ব্যাংক কর্মকর্তা এবং রেজিস্ট্রি অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার বিষয়ে বেশকিছু তথ্য আমরা পেয়েছি। তাদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কাজ করছি।’
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার গোলাম ফারুক জানান, তিনি ২০০০ সাল থেকে গাড়ি আমদানির ব্যবসা শুরু করেন। গাড়ি আমদানির কথা বলে সে সময় তিনি একটি বেসরকারি ব্যাংকে কোনও বন্ধকি সম্পত্তি ব্যতীত এলসি আবেদন করেন। ব্যাংকটি আমদানি করা গাড়ি বিক্রি করে ব্যাংকের অর্থ পরিশোধের শর্তে তাকে ৭ কোটি টাকা ডিমান্ড লোন দেয়। কিন্তু ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করায় ব্যাংক তাকে সম্পত্তি বন্ধক দেওয়ার জন্য চাপ দেয়।
পরে ২০০৬ সালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরার আজমপুর অংশের একটি জমির মালিকের ছেলেকে খুঁজে বের করেন ফারুক। জমিটি ১৯৪৮ সালে সরকার কর্তৃক অধিগ্রহণ হওয়া। তিনি জালিয়াতির সাহায্যে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মালিকের ছেলের নামে এই জমির একটি ভুয়া দলিল তৈরি করেন।
২০১০ সালে ওই দলিলমূলে তৎকালীন মালিকের ছেলের কাছ থেকে গোলাম ফারুক তার স্ত্রীর নামে নামমাত্র মূল্যে জমিটি ক্রয় করে আরেকটি দলিল তৈরি করেন। একই বছর স্ত্রী কাছ থেকে ওই জমি নিজের নামে দলিল করে নেন তিনি। যার সাফ কবলা দলিল নম্বর-৮৮৮০।
খন্দকার আল মঈন গণমাধ্যমে বলেন, ‘বেসরকারি ব্যাংকে ওই জমির কাগজপত্র বন্ধক দিয়ে তিনি ব্যাংক হতে আরও ১৫ কোটি টাকা ঋণ নেন। কিন্তু ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করায় ২০১৩ সালে ব্যাংক অর্থ আদায়ের উদ্দেশ্যে বন্ধকি জমি নিলামে বিক্রি করার নোটিশ জারি করে। ব্যাংক সরেজমিনে গিয়ে দেখতে পায় যে, ওই জমিটি সরকারি সম্পত্তি।
‘পরে ফারুক একটি ভুল সংশোধন দলিল করে আগের বন্ধক রাখা জমির দাগ নম্বর পরিবর্তন করে বর্ণিত মামলার বাদীর (মো. জামির আলী) জমির দাগ নম্বর উল্লেখ করেন। ব্যাংক জমিটিতে বন্ধকি সম্পত্তির সাইনবোর্ড স্থাপনের চেষ্টা করলে প্রতারণার বিষয়টি উন্মোচিত হয়। গ্রেফতার গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে জমি-জমা সংক্রান্ত, প্রতারণা, হত্যাচেষ্টা, এনআই অ্যাক্ট, জালিয়াতি ইত্যাদি অপরাধে রাজউকের একটি, বেসরকারি ব্যাংকের ৪টি এবং পাবলিকের ৩টিসহ মোট ৮টি মামলা রয়েছে।’
ভুক্তভোগী জামির আলী বলেন, ‘সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে এবং রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের যোগসাজশে আমার একটি জমি হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্রের সদস্য গোলাম ফারুক। গত ২৬ মার্চ আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং হত্যার চেষ্টা চালায়।’
এমএম/