ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

রাজশাহীর সেই দুই কৃষকের মৃত্যু কিটনাশক পানে

রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৯:৪৮ এএম, ১৭ এপ্রিল ২০২২ রবিবার

নিহত দুই কৃষক

নিহত দুই কৃষক

রাজশাহীর গোদাগাড়ীর দুই আদিবাসী কৃষকের মৃত্যু কিটনাশক পানেই হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এই তথ্য জানান রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন। 

শনিবার তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তরও করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

ডা. কফিল উদ্দিন বলেন, ‘‘আমরা মৃতের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের নমুনা সংগ্রহ করেছিলাম। এরপর সেগুলো ভিসেরা প্রতিবেদন প্রস্তুতের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছিলাম ল্যাবে। এই ভিসেরা প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করি। তাতে মৃত দুজনের শরীরে কিটনাশক বিষ পাওয়া গেছে।”

তিনি আরও বলেন, “পরীক্ষায় অর্গানো ফসফরাস যৌগ নামে এক ধরনের কিটনাশক বিষ পাই। এই বিষের প্রভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছি।’’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘‘মামলার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। এই প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে পরবর্তি পদক্ষেপ নেয়া হবে।’’

গোদাগাড়ীর এই দুই আদিবাসি কৃষক অসুস্থ হন ২৩ মার্চ বিকালে। নিজেরাই পরিবারের সদস্যদের জানান, তারা বিষ খেয়েছেন। এর মধ্যে অভিনাথ মারান্ডি (৩৬) নামে একজন ওই দিন রাতেই বাড়িতে মারা যান। আর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৫ মার্চ মারা যান তার চাচাতো ভাই রবি মারান্ডি (২৭)। 

দুই কৃষকেরই বাড়ি গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়নের নিমঘুটু গ্রামে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, অনেক ঘুরেও গভীর নলকূপ থেকে সেচের পানি পাচ্ছিলেন না তারা। তাই ক্ষোভে ওই নলকূপের সামনেই দুজনে কিটনাশক পান করেন।

স্বামীর মৃত্যুর ঘটনায় অভিনাথের স্ত্রী রোজিনা হেমব্রম এবং রবির ভাই সুশিল মারান্ডি বাদি হয়ে গভীর নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে আলাদা দুটি মামলা করেন। 

গোদাগাড়ী থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার এই মামলার গ্রেপ্তার হয়েছেন অভিযুক্ত সাখাওয়াত। এরপর তাকে নলকূপ অপারেটরের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি এই ঘটনা তদন্ত করে এরই মধ্যে প্রতিবেদনও দাখিল করেছে। এছাড়া বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও আলাদা করে ঘটনাটি তদন্ত করে।

তবে, মামলার তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য পুলিশ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় ছিল। শনিবার এই প্রতিবেদন হাতে পেয়েছে পুলিশ।

এএইচ/