ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

অর্থনীতিতে বাংলাদেশের ধারেকাছেও নেই শ্রীলংকা (ভিডিও)

মেহেদী হাসান, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩৬ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০২২ রবিবার | আপডেট: ১২:৩৮ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০২২ রবিবার

রিজার্ভ, রেমিট্যান্স কিংবা রপ্তানি; বাংলাদেশের ধারেকাছেও নেই শ্রীলংকা। বৈদেশিক ঋণেও বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ব্যবধান আকাশ-পাতাল। তবুও দেউলিয়া শ্রীলংকার সাথে বাংলাদেশকে তুলনা করে প্রচারণা চলছে। আর যাকে একেবারেই অমূলক বলছেন অর্থনীতিবিদরা। 

রপ্তানি আয়ে রেকর্ড করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে আয় বেড়েছে ৩৩.৪১ শতাংশ। মূলধনী যন্ত্রাংশ ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানিও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। এছাড়া রেমিট্যান্সে তেজীভাব ও খাদ্য উৎপাদনের চিত্রও উর্ধ্বমুখী। সব মিলে শক্তি বাড়াচ্ছে দেশের অর্থনীতি। 

ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে দাতা সংস্থাগুলোও। বিশ্বব্যাংক বলছেন, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৪ শতাংশ। পরের বছরে উন্নীত হবে ৬.৭ শতাংশে। তবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের পূর্বাভাস আরও ইতিবাচক। সংস্থাটি বলছে, অর্থবছর শেষে ৬.৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখতে পাবে বাংলাদেশ। আগামী অর্থবছরে হবে ৭.১ শতাংশ।

এমন বাস্তবতা সত্ত্বেও বাংলাদশের অর্থনীতি নিয়ে চলছে উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা। সম্প্রতি দেউলিয়া হওয়া শ্রীলংকার সাথে তুলনা করতে চাচ্ছে একটি মহল। আর যাকে একেবারেই অমূলক বলছেন অর্থনীতিবিদরা।

অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, “আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার যে তহবিল সেটা ৪৪ থেকে ৪৫ বিলিয়নে ওঠানামা করছে। সুতরাং আমরা খুবই একটা স্বস্তি এবং শক্ত অবস্থানে আছি।”

সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান বলেন, “আমাদের ম্যাক্রো ইকোনমির যে স্থিতিশীলতা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে অর্থনৈতিক ও সামাজিক যে অর্জন গত ১৩ বছর থেকে দেখতে পাচ্ছি সেটির সাথে শ্রীলঙ্কার সমসাময়িক রাজনৈতিকতার সংকট, অস্থিরতা, অর্থনৈতিক যে বিপর্যয় এর তো ধারেকাছেও নেই।”

শ্রীলংকা ডুবছে অপরিকল্পিত বিদেশি ঋণ, পর্যটনে ধ্বস, আর উচ্চাভিলাষী কৃষিনীতির কারণে। এসবের কোনটিই নেই বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। বাংলাদেশের জিডিপির মাত্র ১২ শতাংশ বিদেশি ঋণ। যেখানে শ্রীলংকার ৪২ শতাংশ, পাকিস্তানের ২৬ শতাংশ, আর নেপালের ২৩ শতাংশ।  

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও রিজার্ভ প্রায় কাছাকাছি। রপ্তানি ও রেমিট্যান্সও ভালো। তাই ঋণ পরিশোধে ঝুঁকি নেই। 

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, “বৈদেশিক ঋণ যেটা প্রতিবছর আমরা পরিশোধ করি সেটা সাধারণত তুলনা করা হয় রপ্তানি আয়ের সঙ্গে। তার সর্বশেষ হচ্ছে সাড়ে ৪ শতাংশ মাত্র এবং গত কয়েকবছরে সাড়ে পাঁচ-সাড়ে চার এই পর্যায়ে ছিল। সুতরাং এখানে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারণ নেই।”

ড. আতিউর রহমান বলেন, “শ্রীলংকা থেকে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় যেটা শিক্ষনীয় বলে আমি মনে করি সেটা হল আয় বুঝে ব্যয় করার একটা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।”

চলমান মেগা প্রকল্পগুলো নির্দিষ্ট সময়ে বাস্তবায়নে জোর দেয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের। তারা বলছেন, প্রকল্পগুলো শেষ হলে অর্থনীতি আরও বেগবান হবে। 

এএইচ/