ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৮ ১৪৩১

৪০০ টাকা বেতনের চাকুরে ছিলেন জিয়া: তথ্যমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৪৬ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০২২ রবিবার

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস পালন করে না। অথচ জিয়াউর রহমান মুজিবনগর সরকারের চারশ’ টাকা বেতনের চাকুরে ছিলেন। 

মন্ত্রী রোববার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে সভাকক্ষে মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও ‘সংবাদ শিরোনামে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়া, প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া সভায় অংশ নেন।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগারে ছিলেন বিধায় তিনি শপথ নিতে পারেননি, তার নেতৃত্বেই গঠিত সরকার ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন কুষ্টিয়ার মুজিবনগরে শপথ নিয়েছিল। বাংলাদেশের প্রথম সরকার এই মুজিবনগর সরকারের অধিনেই পুরো মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে। এই সরকারের অধীনেই মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডারদেরকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল।’ 

মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির মুজিবনগর দিবস পালন না করা প্রকারান্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে অস্বীকার করা, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামকে অস্বীকার করা।’ 

ড. হাছান বলেন, ‘আজকে জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি মুজিবনগর দিবস পালন করে না। অথচ জিয়াউর রহমান এই মুজিবনগর সরকারের অধিনেই একজন চাকুরে ছিলেন এবং চারশ’ টাকা বেতন পেতেন। তবে জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেছেন, না কি পাকিস্তানিদের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেছেন, সেটি নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে, প্রকৃতপক্ষে জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ছদ্মাবরণে পাকিস্তানের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেছেন।’   

মন্ত্রী এসময় মুজিবনগর দিবসে সাংবাদিকদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, ‘এদিন শপথ গ্রহণে যাবার জন্য মুজিবনগর সরকারের সদস্যরা এবং সংবাদ সংগ্রহের জন্য দেশি-বিদেশি সাংবাদিকরা সবাই মধ্যরাতে কলকাতা প্রেস ক্লাব থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন গন্তব্য না জেনেই। পরে সবাই কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলা আম্রকাননে সমবেত হন, পরে সেই জায়গার নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। যে সাংবাদিকরা সেদিনকার এই সংবাদ সারা বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’ 

মোড়ক উন্মোচিত গ্রন্থ বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৫২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে সংবাদগুলো পরিবেশিত হয়েছিল, সেগুলো এই বইতে স্থান পেয়েছে। এমন তথ্য সম্বলিত দুর্লভ চিত্র এখানে, আছে যা দেখলে পুরো বইটি পড়তে ইচ্ছে হয়। 

তিনি বলেন, তখনকার দৈনিক আজাদ, ইত্তেফাক, সংবাদ, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক বাংলা, পূর্বদেশ, পিপলস, মনিং স্টার, অবজারভার, বিদেশি পত্রিকার মধ্যে আনন্দবাজার পত্রিকা, হিন্দু, ইভিনিং নিউজ, নিউইয়র্ক টাইমস, টাইমস, জাপান টাইমস, গার্ডিয়ান, ইভিনিং নিউজ, ওয়াশিংটন পোস্টসহ নানা পত্রিকার অংশ বইটিকে সমৃদ্ধ করেছে।

সচিব মো. মকবুল হোসেন বলেন, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস জাতির এক উজ্জ্বল স্মরণীয় দিন। এই দিনের ওপর আলোচনা আমাদের মাঝে দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের অনুভবকে শানিত করে। একইসাথে সচিব ‘সংবাদ শিরোনামে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থটি সকলকে পড়ে দেখার আহ্বান জানান। সভায় জাফর ওয়াজেদ মুজিবনগর সরকারের পটভূমি ও ইতিহাসের ওপর আলোকপাত করেন।

চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর সম্পাদিত ও প্রকাশিত ৪শ’ ৯৬ পৃষ্ঠার ৫শ’ টাকা মূল্যের ‘সংবাদ শিরোনামে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থটিতে বঙ্গবন্ধুর ওপর পাঁচ শতাধিক দেশি-বিদেশি সংবাদ শিরোনামের ছবি ও তথ্য রয়েছে।

এনএস//