ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৭ ১৪৩১

মোস্তফা কামালের উপন্যাস ‘বঙ্গবন্ধু’ প্রকাশ করলো আনন্দ পাবলিশার্স

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:৩৯ পিএম, ১৮ এপ্রিল ২০২২ সোমবার | আপডেট: ০৬:৫৩ পিএম, ১৮ এপ্রিল ২০২২ সোমবার

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক মোস্তফা কামালের দীর্ঘ উপন্যাস ‘বঙ্গবন্ধু’ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিখ্যাত প্রকাশনা সংস্থা কলকাতার আনন্দ পাবলিশার্স। পহেলা বৈশাখে বইটি প্রকাশিত হয়েছে। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০ সালে আনন্দ পাবলিশার্স উপন্যাসটি প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু করোনা অতিমারির কারণে এর প্রকাশনা স্থগিত হয়ে যায়। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটায় এবারের পহেলা বৈশাখে প্রকাশিত হলো। উপন্যাসটি ইতিমধ্যেই ভারতের বাজারে ছাড়া হয়েছে। শিগগিরই বাংলাদেশের বাজারেও ছাড়া হবে।

প্রকাশক সুবীর মিত্র জানান, আনন্দ পাবলিশার্সের সম্পাদনা পরিষদ উপন্যাসটি প্রকাশের জন্য মনোনয়ন দেয়। তারপর প্রকাশনা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ শেষ করে বইটি প্রেসে পাঠানোর আগ-মুহূর্তে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ে। ফলে বইটি সময়মতো প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি।  

লেখক তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আনন্দ পাবলিশার্স অনেক উঁচুমানের এবং পেশাদার একটি প্রকাশনা সংস্থা। আনন্দ পাবলিশার্স থেকে আমার উপন্যাস প্রকাশিত হবে এটা ছিল স্বপ্ন। সেটা বাস্তবে রূপ পেল। এর চেয়ে আনন্দের খবর লেখক হিসেবে আর কি হতে পারে! এজন্য আমি আনন্দ পাবলিশার্সকে কৃতজ্ঞতা জানাই। 

কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক মোস্তফা কামাল।

উপন্যাস সম্পর্কে লেখক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিশাল ক্যানভাসে উপন্যাস রচনার জন্য দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে গবেষণা করেছি। দেশে ও বিদেশে লাইব্রেরী ওয়ার্ক করেছি। শতাধিক গ্রন্থ, সংবাদপত্র, সাময়িকী পড়েছি। তারপর হাত দিয়েছি উপন্যাস রচনায়। উপন্যাসের সময় কাল হচ্ছে, ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১। দেশভাগ থেকে স্বাধীনতা। পূর্ব পাকিস্তানের ২৪ বছরের ইতিহাস; উপ-মহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক অসামান্য অধ্যায়। সেই সময়ের ইতিহাস নির্মাতা বিশেষ করে শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতির শুরু থেকে তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনের সময়কাল নিয়ে লেখা হয় ‘বঙ্গবন্ধু’ উপন্যাস।

১৯৪৭ সালের দেশভাগ এবং পরবর্তী সময়ের ইতিহাস; রাজনীতির উত্থান-পতন, রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় আসে ছয় দফার ঘোষণা। এক পর্যায়ে ছয় দফাকে ঘিরেই পাকিস্তানের রাজনীতি আবর্তিত হয়। নানাঘাত-প্রতিঘাত আর চড়াইউৎরাইয়ের মধ্যদিয়ে গণমানুষের অবিসংবাদিত নেতা রূপে আবির্ভূত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। তাঁর হাত ধরেই আসে স্বাধীনতা। 

এ কথা স্বীকার করতেই হবে, ইতিহাসআশ্রিত উপন্যাস রচনার কাজটি খুবই কঠিন। ঐতিহাসিক চরিত্র ও ঘটনাপ্রবাহ সত্য। কিন্তু লিখতে হয়েছে উপন্যাস। চরিত্র ও ঘটনাপ্রবাহ ঠিক রেখে আমাকে কল্পনা করতে হয়েছে সেই সময়কে। আত্মস্ত করতে হয়েছে সেই সময়ের মানুষগুলির চরিত্র, তাঁদের কর্মকাণ্ড এবং ইতিহাস-রাজনীতির নানা প্রেক্ষাপট। ইতিহাস যদি হয় কোনো মানুষের কঙ্কাল তাহলে সেই ইতিহাসে রক্ত-মাংস, শিরা-উপশিরা দিয়ে জীবন্ত করে তোলেন কথাশিল্পী। আমি সেই কাজটিই করেছি। 

মোস্তফা কামাল বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক। ১৯৮৪ সালে তাঁর লেখালেখি শুরু। সাহিত্যের প্রায় সব শাখাতেই রয়েছে তাঁর অবাধ বিচরণ। পেশাগত সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন ১৯৯১ সালে। সংবাদ, প্রথম আলো ও কালের কণ্ঠ পত্রিকায় নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ থেকে ২০২০ সময় কালে তিনি কালের কণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি মাল্টিমিডিয়া অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকাপ্রকাশ-এর প্রধান সম্পাদক। 

তাঁর সাড়াজাগানো উপন্যাস, ‘১৯৭৫’, ’দেবো খোঁপায় তারার ফুল’, ‘জননী’, ‘অগ্নিকন্যা’, ‘অগ্নিপুরুষ’, ‘অগ্নিমানুষ’, ‘জনক জননীর গল্প’, ‘পারমিতাকে শুধু বাঁচাতে চেয়েছি’, ‘জিনাতসুন্দরী ও মন্ত্রীকাহিনী’, ‘হ্যালো কর্নেল’ প্রভৃতি। এ পর্যন্ত প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১১৭টি। ২০১৮ সালে ভারতের চেন্নাই থেকে তিনটি উপন্যাসের ইংরেজি সংকলন ‘থ্রি নভেলস’ প্রকাশের মধ্যদিয়ে আন্তর্জাতিক সাহিত্যাঙ্গণে যাত্রা। এরপর ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯-এ লন্ডনের অলিম্পিয়া পাবলিশার্স প্রকাশ করে ‘জননী’ উপন্যাসের ইংরেজি সংস্করণ ‘দ্য মাদার’। সারাবিশ্বে বইটি বাজারজাত করে অ্যামাজন।

এসি