ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

শুধু পাকাবাড়িই নয়, দীর্ঘ এক স্বপ্নের পূরণ

বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০২:০৮ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২০২২ শনিবার

“মুজিববর্ষে বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের বাসস্থান নিশ্চিতকল্পে গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ কার্যক্রমের সঙ্গে বরগুনা প্রথম থেকেই যুক্ত। দুই শতাংশ জমিতে দুই রুমের পাকা ঘরের সঙ্গে রান্নাঘর, বাথরুম ও একটি বারান্দা। প্রত্যেক ঘরে ঘরেই জ্বলবে বিদ্যুতের আলোও। 

নতুন ঠিকানা প্রাপ্তির আনন্দ আর জমির মালিকানায় চোখেমুখে তাদের স্বপ্নপূরণের ঝিলিক। সমাজের পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠী তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরাও বরগুনায় পেয়েছেন এই ঘর।

অন্যের বাসায় গৃহপরিচালিকার কাজ করতেন মায়া রানী। আগে পরিচয় ছিল ভাড়াটিয়া, এখন তিনি বাড়ির মালিক। শুধু বাড়ি নয় দুই শতাংশ জমিরও মালিক। দীর্ঘ কুড়ি বছর ধরে বিভিন্ন জায়গায় লাঞ্ছনা সহ্য করে ভাড়া থাকতেন। প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাইকৃত ২১৯ জনকে তালিকাভূক্ত পরিবারের পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে ঘর পেয়েছেন মায়া রানী।

অন্যদিকে, সমাজের পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠী তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য সিমু হিজরা ভাড়া থাকতেন। পরিচয়ের জন্য বাসা ভাড়া পেতেও হতো অনেক কষ্ট। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এখন দুই শতাংশ জমিসহ পাকা বাড়ির মালিক সিমু। এ যেনো শুধু পাকা বাড়িই নয়, দীর্ঘ এক স্বপ্নের পূরণ। মৌসুমীসহ ২১ হিজরা জায়গা ও পাকা ঘরতো পেয়েছেনই তার সাথে আয়বর্ধনের জন্য পেয়েছেন ছাগল।

শুধু মায়া রানী, সিমু, মৌসুমী ও জায়েদা বেগম নয়, একই ধরণের স্বপ্ন পূরণের গল্প শুনিয়েছেন মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণে ঘর পেয়ে দিনমজুর প্রতিবন্ধী ইকবাল হাসান, রিনা বেগমসহ আরও অনেকে।  

রহিমা বেগম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আমাদের জমি পাকাঘর তো দিয়েছেনই তার সঙ্গে বিদ্যুৎ এবং বিশুদ্ধ পানি খাবার জন্য টিউবয়েলও দিয়েছেন। আর এই মহাউপকারের জন্য আমরা নামাজ পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি।”

ঘরসমূহ নির্ধারিত ডিজাইন অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে পিআইসির সার্বক্ষণিক তদারকির মাধ্যমে সুদক্ষ কারিগর দ্বারা সুচারুরূপে সম্পন্ন করা হচ্ছে। লাল সবুজ রঙ্গের টিনে আচ্ছাদিত সেমিপাকা এসব ঘর যেন একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন। সে সঙ্গে প্রতিটি উপকারভোগীর জীবন বদলে যাওয়ার এ গল্পের রূপকার প্রধানমন্ত্রী।
 
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, “এ স্বপ্ন পূরণের সারথী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বরগুনাবাসীর পক্ষ থেকে অশেষ কৃতজ্ঞতা।”

প্রথম পর্যায়ে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৩০টি ঘরের বরাদ্দের প্রেক্ষিতে বরগুনা সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নের খাজুরতলা মৌজায় ১১.৪৫ একর খাস জমি অবৈধ দখল হতে উদ্ধার করে কার্যক্রম শুরু করা হয়। জনপ্রতিনিধিসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর বরগুনা সদর উপজেলায় কাজের শুভ উদ্বোধন করেন বরগুনা জেলা প্রশাসক।

আরএমএ/এএইচ