ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকের গুলিতেই ৪,৩০০ শিশুর মৃত্যু

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:০৯ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২০২২ শনিবার

২০২০ সালে কোভিড মহামারীর শুরুর বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৪ হাজার ৩০০ শিশুর মৃত্যু ঘটেছে বন্দুক হামলা সংক্রান্ত কারণে। আর সব বয়সী মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ৪৫ হাজার ২২২। শনিবার এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আইনিভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার সুযোগ অনেকটা অবাধ হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ৩২ কোটি নাগরিকের হাতেই রয়েছে ৩৯ কোটি আগ্নেয়াস্ত্র।

বিভিন্ন সময়ে এসব আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবি উঠলেও অস্ত্র উৎপাদক ও ব্যবসায়ীদের চাপে তাতে কোনো কাজ হয়নি। আর মহামারীর মধ্যে তো বন্দুক সহিংসতা আরও বেড়ে যায়।

ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালে আগ্নেয়াস্ত্রের কারণে ১ থেকে ১৯ বছর বয়সী শিশুর মৃত্যু আগের বছরের চেয়ে ৩৩ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। বিগত বছরগুলোতে তরুণ আমেরিকানদের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল গাড়ি দুর্ঘটনা, এরপরেই ছিল বন্দুক হামলা ও গুলিজনিত মৃত্যু।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু কমেছে। ২০২০ সালে ১৯ বছররে নিচে আনুমানিক ৩ হাজার ৯০০ আমেরিকানের মৃত্যু হয়েছে।

২০২০ সালে বন্দুক সহিসংসতায় মোট ৪৫ হাজার ২২২ জন আমেরিকানের মৃত্যু হয়েছে। দুই দশক আগের তুলনায় গত কয়েক বছরে এই মৃত্যু ১৩ শতাংশ বেড়েছে।

সিডিসির গবেষণা অনুযায়ী, শিশু-কিশোরদের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে সার্বিক প্রাণহানির হার ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ। গুলিতে মৃত্যুর ঘটনাগুলোর মধ্যে হত্যার পাশাপাশি রয়েছে আত্মহত্যা, অবহেলাজনিত ও অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে গুলিতে আত্মহত্যার হার বেড়েছে ১ দশমিক ১ শতাংশ।

গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, “যে মৃত্যু প্রতিরোধ করা যায়, সেই মৃত্যু থেকে আমরা আমাদের শিশুদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছি।”

গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যে এবং জাতিগত জনসংখ্যা জুড়ে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে বন্দুকজনিত মৃত্যুর হার বেড়েছে। কালো আমেরিকানদের মধ্যে এই হার বেশি বেড়েছে।

অল্পবয়সীদের মৃত্যু হার বেড়ে যাওয়ার আরও দুটো কারণ হল অতিরিক্ত মাত্রায় মাদক সেবন এবং বিষক্রিয়া; এই দুই কারণে মৃত্যু বেড়েছে ৮৩ দশমিক ৬ শতাংশ।

চলতি বছরে এপ্রিলের শুরুতে আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, এসব কারণে ২০১৯ সালে ৪৯২ জন তরুণের মৃত্যু হয়, এর পরের বছরই এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৫৪ জনে।

আগ্নেয়াস্ত্রের কারণে মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার কারণ স্পষ্ট না হলেও গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, “অনুমান করা যায় যে আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত মৃত্যু আগামীতে প্রাক-মহামারী স্তরে ফিরে আসবে।”

ফেব্রুয়ারিতে অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিনে প্রকাশিত পৃথক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ৭৫ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক (যা জনসংখ্যার ৩ শতাংশেরও কম) প্রথমবারের মতো আগ্নেয়াস্ত্রের মালিক হয়েছিলেন, যা পরবর্তীতে ৫০ লাখ শিশুসহ ১ কোটি ১০ লাখ মানুষকে বাড়ির ভেতরেই আগ্নেয়াস্ত্রের মুখোমুখি করেছে। সূত্র- বিবিসি।

এনএস//