টানা তিনদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৮:৩৫ এএম, ২৫ এপ্রিল ২০২২ সোমবার
তীব্র গরমে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। আবহাওয়া অধিদপ্তর রোববার বেলা তিনটায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশের সর্বোচ্চ। আট বছরের মধ্যে এ জেলায় এটিই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলার হাটকালুগঞ্জে অবস্থিত আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামাদুল হক।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ২১ মে চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত আট বছরের মধ্যে রোববার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে শুক্রবার ৩৫ ডিগ্রি ও শনিবার ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল এ জেলায়।
সব মিলিয়ে টানা তিন দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়। প্রচণ্ড রোদের কারণে চুয়াডাঙ্গায় মানুষের চলাফেরা কমে এসেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না।
রিকশাচালক বাকের আলী বলেন, ‘গরমের ঠেলায় জীবনডাই কাহিল অবস্থা। রোদির তেজ দেইকে মানুষ ঘর থেইকে বেইরই হচ্চে না। লোকজন ঘর থেইকে বেইর না হলি আমরা প্যাচেঞ্জার ক্যারাম করে পাবো, আর আয়-ইনকামই বা ক্যারাম করে হবে।’
বড় বাজারের পোশাক বিক্রেতা বিপুল বলেন, ‘প্রতিবছর রোজার শেষ সপ্তায় খদ্দের ঠেলে নড়ানো যায় না। আজগে সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত কিছু খদ্দের আসেলো। তারপর থেকে বাজার প্রায় ফাঁকা। খদ্দের আসপে কি না বুজা যাচ্চে না।’
গরমের তীব্রতার কারণে বাজারে তরমুজ, ডাব ও আখের রসের চাহিদা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে দামও।
প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা করে, যা ছিল ৪০-৪৫ টাকা।
সাইফুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা বলেন, ‘তিনদিন আগে যে তরমুজ ২৪০ ট্যাকায় কিনলাম। আজগে তা ওজন করে কিনতি হলো ৪০০ ট্যাকায়।’
কেদারগঞ্জ নতুন বাজারে ডাব বিক্রেতা আকিদুল ইসলাম প্রতিটি ডাবের দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা চাওয়ায় আজিবর আলী নামের এক ক্রেতার সঙ্গে প্রায় হাতাহাতি অবস্থা। আজিবরের অভিযোগ দুই দিন আগেও যে ডাব ৫০ টাকায় কিনেছেন, তাপ বেড়ে যাওয়ায় একই আকারের ডাবের দাম হাঁকানো হচ্ছে ৭০ টাকা। আর বিক্রেতা আকিদুলের দাবি, আগে পাইকারি প্রতিটি ডাব ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় কিনলেও গরমের কারণে তা ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে।
শহরের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় আখের রস কিনতে রোজাদারদের ভিড় দেখা যায়। কিন্তু দাম শুনে কেউ কেউ রস না কিনেও ফিরে যান। হাসিব আলী নামের একজন ক্রেতা অভিযোগ করেন বলেন, ‘এত দিন এক গ্লাস আখের রস ১০ টাকা দরে কিনে আসলেও আজ এক লাফে তা বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়েছে। এটা কি মগের মুল্লুক।’
রস বিক্রেতা নূরুল ইসলাম বলেন, রোজার মাসে এমনিতেই আখের রসের চাহিদা বেড়ে যায়। গত কয়েক দিন ধরে তীব্র গরমের কারণে চাহিদা বেড়েই চলেছে। বেশি দামে আখ কেনার কারণে রসের দামও বাড়ানো হয়েছে।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামাদুল হক বলেন, বর্তমানে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র দাবদাহ বয়ে চলেছে। বৃষ্টি না হলে এই তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
এএইচ/