বিরোধী দলের নাজুক অবস্থা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি (ভিডিও)
ফারজানা শোভা, একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:১৫ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০২২ সোমবার | আপডেট: ১২:২৯ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০২২ সোমবার
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে শক্ত অবস্থান জানান দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে দুই বিরোধী দল বিএনপি ও জাতীয় পার্টি। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি জনগণের আস্থা তৈরি করতে পারেনি, তাই বিচলিত নন তারা। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, বিরোধী দলের নাজুক অবস্থা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।
দুই বছরের জরুরি অবস্থা পেরিয়ে ভোটে জিতে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। এরপর দুটি নির্বাচনে জয়ী হয়ে এখনও প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন শেখ হাসিনা।
১১ এপ্রিল নিজ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা শক্তিশালী বিরোধী দল নেই বলে হতাশা প্রকাশ করেন।
এই ১৩ বছরে বিএনপির রাজনীতি ঘুরপাক খেয়েছে দলের শীর্ষ দুই নেতার মুক্তির দাবিতে। দুর্নীতি ও সহিংসতার মামলা মোকাবেলায় ব্যস্ত ছিল নেতাকর্মীরা। জনসম্পৃক্ত দাবি নিয়ে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। বরং গুজব ও ধর্মীয় উস্কানী ছড়ানোর অভিযোগে নেতিবাচক ইমেজে ভুগছে দলটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “গুম, খুন, হত্যা ও মিথ্যা মামলার শিকার হয়েও বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে জ্বলে-পুড়ে খাটি সোনায় পরিণত হয়েছে। সবচেয়ে শক্তিশালী দল, আর এটাই হচ্ছে অবৈধ সরকারের ভয়ভীতির কারণ। যে কারণে তারা একটি সুষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচনে যেতে পারছে না।”
সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। কিন্তু দলটি বিরোধীদলের ভূমিকা কতোটা পালন করছে তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে দল সাজাচ্ছে জাতীয় পার্টি।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, “আমাদের কিছু কার্যক্রমে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু আমরা ওই বিভ্রান্তগুলো দূর করার চেষ্টা করছি। আমরা স্বতন্ত্র, আওয়ামী লীগ-বিএনপিও নই। নিজস্ব স্বকীয়তা জনগণের কাছে তুলে ধরার জন্য সামনের দিনগুলোতে জোড় দেওয়া হবে।”
তবে আওয়ামী লীগের নেতা বলেছেন, অতীতের সহিংসতা ও অগণতান্ত্রিক রাজনীতির চর্চার খেসারত দিতে হবে বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “গণতান্ত্রিক চর্চার রীতিনীতির পরিবর্তে এই কাজগুলো বিরোধী দলগুলো করছে। বিরোধী দলের কি কাজ, দিনের পর দিন হরতাল ডেকে মানুষকে অবরুদ্ধ করে রাখা। বিরোধী দলের কী কাজ, তাদের রাজনৈতিক দাবি পূরণ করার জন্য মানুষের উপর প্যাট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা। গণতন্ত্রকে সংহত করার জন্য তো তাদেরও একটা ভূমিকা আছে। সেই ভূমিকা তারা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।”
বিরোধী দলের নাজুক অবস্থা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক অজয় দাসগুপ্ত বলেন, “আওয়ামী লীগ যেটা চায় সেটার পক্ষে যদি জনসমর্থন তৈরি করতে না পারে সেটা আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা। বিরোধী দল শক্তিশালী থাকলো কিন্তু তারা জনগণের কথা বলল না, সেটা তো আওয়ামী লীগ জোড় করে কথা বলাতে পারবে না। তবে বিরোধী দলের কথা বলা উচিত, যেটা এখনকার যুগে বিশ্ব সমাজও দেখতে চায়।”
এএইচ/