হলিউডকে নকল করতে গিয়ে ডুবছে বলিউড: রাভিনা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৪৪ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০২২ সোমবার
দিনে দিনে কেমন যেন জৌলুস হারাচ্ছে বলিউড! অন্তত তেমনটাই মনে করেন রাভিনা ট্যান্ডন।
‘বাহুবলী’ থেকে ‘পুষ্পা’ বা সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘আরআরআর’ বা ‘কেজিএফ ২’- সবকিছুতেই বলিউডকে যেন ছাপিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণী সিনেমা। বলিউড তারাকারাও ঝুঁকছেন সেদিকে।
রাভিনা নিজেও কাজ করেছেন ‘কেজিএফ ২’ তে। সাথে ছিলেন আরেক তারকা সঞ্জয় দত্ত।
কেন এই হাওয়া বদল?
রাভিনার মতে, হলিউডের সিনেমার নকল করতে গিয়েই ডুবছে বলিউড, যা মানুষ ভাল চোখে দেখছে না।
তিনি দক্ষিণের সিনেমার সাফল্যের রহস্যও জানিয়েছেন।
তার মতে, দক্ষিণের সিনেমা তৈরি হয় দেশীয় গল্প নিয়ে। ফলে দর্শকরা নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করতে পারেন গল্পের সঙ্গে। আর এটাই দক্ষিণের সিনেমার সাফল্যের রহস্য।
এই বিষয়ে রাভিনা নব্বই দশকের বলিউড সিনেমার প্রসঙ্গ তুলেছেন।
“ওই সময় পর্যন্ত গান ও গল্পে ছিল দেশীয় ছোঁয়া। তারপর থেকে হলিউডের নকল করা শুরু হয়। বলিউড ছবিতে পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব, নায়ক বা ভিলেনের চপারে যাতায়াত- এসব আরও দূরে সরিয়েছে ভারতীয় দর্শককে।
“অন্যদিকে, দক্ষিণী ছবিতে দেশের গল্প, দেশীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া থাকার ফলে মানুষের মধ্যে তার আকর্ষণ বাড়ছে। এমনকি অ-হিন্দিভাষী ভারতীয়রাও দক্ষিণের ছবি দেখতে হলে ভিড় করছে।”
নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “আমি নিজেও যখন (বলিউডের) স্ক্রিপ্ট পড়তাম, তখন বুঝতে পারতাম কোথাও যেন গল্পগুলো আলাদা হয়ে যাচ্ছে। দেশের সংস্কৃতি এবং ভাবনার সঙ্গে মিলছে না। হাল আমলে বলিউড ছবির পশ্চিমাকরণের শুরু হয়েছে যশরাজ এবং ধর্মা প্রোডাকশনসের হাত ধরে। দু’টিই বর্তমানে বলিউডে সবচেয়ে বড় প্রোডাকশন হাউস।”
একটা সময় অবধি মানুষ তাদের প্রযোজিত ছবিগুলো পছন্দ করেছেন। কিন্তু লাগাতার পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রাধান্যে দর্শক দূরে সরেছে। আয়ের অঙ্কেও দক্ষিণী চলচ্চিত্র (তেলুগু, তামিল, কন্নড় এবং মালায়লাম) বলিউডকে ছাপিয়ে গেছে।
২০২১ সালে বক্স অফিসের হিসাবে সবচেয়ে বেশি আয় করেছে তেলুগু সিনেমা।
দক্ষিণী ছবির বিষয়বস্তু বেছে নেওয়া হয় বৃহৎ অংশের দর্শকদের কথা মাথায় রেখে। আল্লু অর্জুনের ‘পুষ্পা’র কথাই ধরা যাক। এই ছবির বিষয়বস্তু একেবারেই অনন্য। গল্প বলার পদ্ধতিতেও নিজস্বতা রয়েছে। শুধু বিষয়বস্তু নয়, দক্ষিণী অভিনেতারাও মন ছুঁয়ে যাচ্ছেন দর্শকের। অভিনেতার স্টাইলও সাফল্যের একটি অন্যতম সূত্র।
যে স্টাইলের শুরু করেছিলেন রজনীকান্ত, তা বজায় রেখেছেন তেলুগু তারকা আল্লু অর্জুন, প্রভাস, মহেশ বাবু, জুনিয়র এনটিআর এবং রাম চরণ।
ভারতের আর্থিক বিশেষজ্ঞ রমেশ বালার মতে, সিনেমার বৃহত্তর বাজারকে এড়িয়ে যাচ্ছে বলিউড। আর সেই জায়গাতেই ঢুকে পড়ছে দক্ষিণী ছবি।
“সিনেমার যে বৃহৎ বাজার রয়েছে বলিউড গত কয়েক বছর ধরে তা উপেক্ষা করছে। রাজকুমার রাও, আয়ুষ্মান খুরানা অভিনীত চলচ্চিত্রগুলি বৃহত্তর ভারতীয় দর্শককে ছুঁতে পারে না।”
সূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন
আরএমএ/ এসএ/