ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

বিলকুড়ালিয়ার খালে অপরিকল্পিত স্লুইসগেট, অনাবাদি ৬শ’ বিঘা জমি

রাজিউর রহমান রুমী, পাবনা থেকে

প্রকাশিত : ০৫:৩১ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০২২ সোমবার | আপডেট: ০৫:৩৩ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০২২ সোমবার

পাবনার চাটমোহরের বিলকুড়ালিয়া

পাবনার চাটমোহরের বিলকুড়ালিয়া

পাবনার চাটমোহরের বিলকুড়ালিয়া বিলে ৬’শ বিঘা জমির বুকজুড়ে কচুরিপানা আর জলাবদ্ধতা। বিলের বুক চিরে বয়ে চলা খালে পলি জমে প্রায় বন্ধ। বর্ষা মৌসুমে পানি বৃদ্ধির সাথে খালের পানি উপচে কচুরিপানা ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিলজুড়ে। শুকনো মৌসুমে পানি কমলেও, জলাবদ্ধতা থেকেই যায়। আর কচুরিপানা খাল দিয়ে বের হতে না পেরে জমে থাকে বিলের বুকজুড়ে। 

কারণ হিসেব চিহিৃত খালের মাঝখানে থাকা ছোট্ট একটি স্লুইসগেট। অপরিকল্পিত এই স্লুইসগেটই দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ। এতে প্রতিবছর লোকসান গুণতে হচ্ছে বিলপাড়ের ভূমিহীন কৃষকদের।

এ চিত্র পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিলকুড়ালিয়া বিলের। বছরের পর বছর ধরে অনাবাদি পড়ে থাকছে বিলের  অন্তত ৬শ’ বিঘা জমি। জলাবদ্ধতা আর কচুরিপানা গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিলপাড়ের ৫শ’ ভূমিহীন কৃষকের। কিছু জমিতে এক ফসলী আবাদ করা গেলেও, উৎপাদন খরচ বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

কৃষকদের দাবি, খালটি খনন ও স্লুইসগেট ভেঙে ব্রিজ করা গেলে এক ফসলি জমি পরিণত হবে তিন ফসলীতে।

উপজেলার হরিপুর মোমিনপাড়া গ্রামের কৃষক হাসান আলী ও বাহার উদ্দিন বলেন, বিলের মূল সমস্যা কচুরিপানা। এখনও প্রায় ৬শ থেকে ৭শ’ বিঘা জমি কচুরিপানায় ভরপুর। এগুলো পরিষ্কার করা সম্ভব না। কারণ অনেক পানি, জলাবদ্ধতা। আর যে জমিগুলো কচুরিপানা পরিষ্কার করে এক ফসল ধান লাগাই, তাতে যে খরচ হয় তার সিকি ভাগও ওঠে না।

লাউতিয়া গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন হোসেন বলেন, বিল থেকে পানি বের হওয়ার মুখে একটা স্লুইসগেট আছে, যেটা খুব নিচু। ফলে যখনই বর্ষা মৌসুমে পানি আসে তখন ওইখান দিয়ে কচুরিপানা বের হতে পারে না। যার কারণে কচুরিপানা খাল উপচে সারা বিলে ছড়িয়ে পড়ে। খালটিও পলি পড়ে পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। বিভিন্ন সময়ে আমরা দেখেছি প্রকল্প আসে, খাল খনন কাজ শুরু হয়। কিন্তু কিছুদিন পর অজ্ঞাত কারণে খনন প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়।

উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের লাউতিয়া গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, সরকারের কাছে বিলপাড়ের সমস্ত কৃষকের প্রাণের দাবি বিলকুড়ালিয়া থেকে চিকনাই পর্যন্ত ক্যানেলটি ৬ থেকে ৭ ফিট গভীর ও ৫০ ফিট প্রশস্ত করে খনন করা যায় এবং স্লুইসগেট ভেঙে বড় করে ব্রিজ করা যায় তাহলে কচুরিপানা আর থাকবে না। বিলের জমিগুলো এক ফসলীর জায়গায় তিন ফসলী জমিতে রুপান্তরিত হবে। কৃষকও দীর্ঘ বছরের দুর্ভোগের হাত থেকে বাঁচবে।

চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এ মাসুম বিল্লাহ বলেন, বিষয়টি উপজেলা সেচ কমিটি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। ক্যানেল খনন ও স্লুইসগেট ভেঙে ব্রিজ নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাবনাও দেয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে কৃষকদের এই দূর্ভোগ লাঘবের চেষ্টা চলছে।

এনএস//