ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

কোন দেশের কি ধরনের ইফতার (ভিডিও)

মুহাম্মদ নূরন নবী, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৩১ এএম, ২৬ এপ্রিল ২০২২ মঙ্গলবার

পবিত্র সিয়াম সাধনার অন্যতম অনুসঙ্গ ইফতার হয়ে উঠছে সংস্কৃতির অংশও। ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের সঙ্গে অন্য সম্প্রদায়ের মানুষও যোগ দেন ইফতারের আয়োজনে। খেজুর, পানি কিংবা শরবত এমন ইফতার সামগ্রী সব দেশে থাকলেও অঞ্চলভেদে থাকে আয়োজনের রকমফের। কয়েকটি মুসলিম প্রধান দেশের রকমারী ইফতারের খবর তুলে ধরা হল।

ইসলাম ধর্মের সূতিকাগার শ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দেশ সৌদি আরব। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইফতারের আয়োজনটি হয় মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীতে। জড়ো হন লাখো মানুষ। 

ইফতারীতে থাকে খেজুর, আঙুর রসের শরবত ও বিভিন্ন ধরণের ফল। তামিজ নামে এক প্রকার রুটি, মাংসের তৈরি পিঠা বারাক আর মুরগির মাংস ও ভাতের মিশেলে খাবার মানডি অথবা ভেড়ার মাংসের খাবসা- খুবই জনপ্রিয় নবীর দেশে। 

দুবাইয়ের ইফতারে সাদৃশ্য সৌদির সাথে। এখানকার মানুষের পছন্দ ভারি ইফতার। ভেড়ার মাংসের ওউজি, মালফুফ কিংবা মাছের তৈরি কইশা মাহসি ছাড়া আয়োজন যেন জমেই না। 

ইফতারে সৌখিনতা দেখা যায় প্রাচীন সভ্যতার নির্দশনের দেশ মিশরে। আটা, মধু, বাদাম ও কিসমিসের তৈরি কেক জাতীয় খাবার কানাফা ও কাতায়েফ। বেগুন, পেপার টমেটোর মিশেলে খাবার মাহশি মিশরের প্রধান ইফতার সামগ্রীর স্থান দখল করে আছে।  

শুধু শুকনো খাবার বা খেজুর দিয়ে ব্যতিক্রমী ইফতারের প্রচলন মালয়েশিয়ায়। আর বুবুর ল্যাম্বাক নামে বিশেষ এক ধরণের খাবার মাসজুড়ে মসজিদ থেকে বিতরণ হয় রোজাদারদের মাঝে। এছাড়া এখানের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইফতার সামগ্রী- আখের রস ও সয়াবিনের দুধ দিয়ে তৈরি এক ধরণের মিষ্টান্ন। 

দুধ ও চিনি দিয়ে তৈরি খাবার কোলাক ছাড়া ইফতার যেন কল্পনাতীত ইন্দোনেশিয়ায়। ফল ও ফলের রস থাকলেও ভাজাপোড়া জাতীয় খাবারেরও স্থান থাকে পাতে। সিদ্ধ চালের তৈরি খাবার কিস্যাক, সামুদ্রিক মাছের তৈরি খাবার সোতো পাং কং আর বিশেষ সবজি পাকাথ থাকে ইন্দোনেশিয়ানদের ইফতার আয়োজনে। 

ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্যে ইফতার সাজানোয় পটু ইরানের মুসলিমরা। তাদের ইফতারের পাতে দেখা যায়- খেজুর, আপেল, চেরি, আখরোট, তরমুজ, আঙ্গুর, কলাসহ নানান মিষ্টান্ন খাবার। 

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ইরাকে আগের মত জৌলুশ না থাকলেও ইফতারের বৈচিত্র্য কমেনি কোন অংশেই। গরু, মহিষ কিংবা ছাগলের দুধে রোজা ভাঙেন বেশিরভাগ মুসল্লী। মিষ্টি, কাবাব, মুরগির মাংসের নাওয়াশিফ, খেজুর-বাদাম-নারকেল-চিনি-জাফরান মেশানো বিস্কুট ক্লেইচা খুবই জনপ্রিয়। দুধের তৈরি বিশেষ ধরণের পুডিং মাহালাবি থাকে মিষ্টান্ন হিসেবে। 

তুরস্কের ইফতার আয়োজন বেশ জমকালো। রমজান পিদেসি নামের খাবারটি শুধু রোজার মাসে মিলে দেশটিতে। যা তৈরি হয় ময়দা আর বীজ দিয়ে। এছাড়া তালিকায় থাকে পাইড নামক রুটি, খেজুর, জলপাই, বিভিন্ন ধরণের পনির। আর গরুর মাংসের পাস্তিরমাহ খুবই জনপ্রিয়। আটা, কাজুবাদাম, আখরোট ও মধু’র তৈরি মিষ্টান্ন সাম সিলুলি তুর্কি আদিবাসীদের ইফতারীর পাতে যেন থাকতেই হবে।

এএইচ/