ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

নতুন ভ্যাট আইনের স্বাধীন পর্যালোচনা চায় এফবিসিসিআই

প্রকাশিত : ০৬:২৪ পিএম, ১ জুলাই ২০১৭ শনিবার

১৫ শতাংশ অভিন্ন ভ্যাট আরোপ সংক্রান্ত নতুন আইনের কার্যকারিতা দুই বছর পেছানোয় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সংগঠন ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। একই সঙ্গে স্বাধীন সংস্থা দিয়ে এর প্রভাব পর্যালোচনা করতে সংগঠনটির পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। শনিবার থেকে কার্যকর হওয়া নতুন অর্থ বছরের বাজেট নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভ্যাট আদায়ে হয়রানি বন্ধেরও দাবি জানিয়েছে এফবিসিসিআই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মো. মুনতাকিম আশরাফ, বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, বিকেএমইএ সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) বলেন, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন দুই বছরের জন্য স্থগিত করায় এবং ব্যাংক আমানতের উপর প্রস্তাবিত আবগারি শুল্ক হ্রাস করায় দেশের সমগ্র বেসরকারি খাতের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ভ্যাট আইন ২০১২ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেহেতু দুই বছর সময় সামনে থাকছে, সেহেতু এই আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্বাধীন সংস্থা কর্তৃক ‘ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট’ (প্রভাব পর্যালোচনা) করা হোক। তারপর সংশোধন করে বাস্তবায়ন করা হোক।

তৈরি পোশাক, চামড়া, হিমায়িত ও খাদ্যসহ সব ধরনের রপ্তানি আয়ে উৎসে কর কর্তনের হার ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ৫০ শতাংশ করার আহ্বান জানান তিনি। সেই সঙ্গে স্থানীয়ভাবে তৈরি হাওয়াই চপ্পল ও প্লাস্টিকের পাদুকা, হাতে তৈরি পাউরুটি ও বিস্কুটের ওপর আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়।

ভ্যাট আইনের প্রয়োগের নামে ব্যবসায়ীদেরকে হয়রানি করা হয়ে থাকে মন্তব্য করে শফিউল, আমরা আইন প্রয়োগের বিরুদ্ধে নই, তবে হয়রানির শিকার হতে চাই না।

২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২’ নতুন অর্থবছর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা বলা হলেও বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ার শংকা ও নির্বাচন সামনে রেখে ভোটের সমীকরণ মেলানোর চিন্তায় পিছু হটে সরকার।

বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘অনুরোধে’ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিত তার অর্থবিলে সংশোধনী আনেন; ভ্যাট আইনের বাস্তবায়ন ঝুলে যায় অন্তত দুই বছরের জন্য।

২০১২ সালের এই আইন গত বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকরের কথা থাকলেও তখনও ব্যবসায়ীদের প্রবল বিরোধিতায় একবছর পেছানো হয়।

প্রস্তাবিত বাজেটে বছরের যে কোনো সময় ব্যাংক হিসাবে এক লাখ টাকার বেশি স্থিতি থাকলে আবগারি শুল্ক বিদ্যমান ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৮০০ টাকা আরোপের প্রস্তাব করা হয়। ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত স্থিতির ক্ষেত্রে ১ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ২ হাজার ৫০০ টাকা, ১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত স্থিতির ক্ষেত্রে ৭ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ১২ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার বেশি স্থিতিতে ১৫ হাজার টাকার বদলে ২৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক আদায়ের প্রস্তাবও করেন মুহিত।

কিন্তু ব্যাপক সমালোচনার মুখে তুলনামূলক স্বল্প ব্যাংক আমানতে আবগারি শুল্কহার বাড়ানোর পরিকল্পনা থেকে সরে আসে সরকার। এক লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতে কোনো আবগারি শুল্ক না রাখতেই বলেন প্রধানমন্ত্রী; ১ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত তিনটি স্তর প্রস্তাব করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী ১ লাখ ১ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতে ১৫০ টাকা এবং ৫ লাখ ১ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতে ৫০০ টাকা আবগারি শুল্ক কাটার প্রস্তাব করেন।