ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

আফ্রিদিকে ‘চরিত্রহীন’, ‘মিথ্যাবাদী’ বলে বোমা ফাটালেন কানেরিয়া

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:০৯ পিএম, ২৯ এপ্রিল ২০২২ শুক্রবার

দানিশ কানেরিয়া ও শহিদ আফ্রিদি

দানিশ কানেরিয়া ও শহিদ আফ্রিদি

অলরাউন্ডার শহিদ আফ্রিদিকে নিয়ে বোমা ফাটানো মন্তব্য করেছেন দেশটির আরেক সাবেক ক্রিকেটার দানিশ কানেরিয়া। শুধু তা-ই নয়, সাবেক অধিনায়ককে ‘চরিত্রহীন’ ও ‘মিথ্যাবাদী’ আখ্যায়িত করে রীতিমত হইচই ফেলে দিয়েছেন তিনি।

ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে কানেরিয়াকে নিষিদ্ধ করে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। যদিও কানেরিয়া মনে করেন, আফ্রিদির মত ‘প্রভাবশালী’ ক্রিকেটারদের কারণে বিনা দোষে তাকে শাস্তি পেতে হয়েছে। এছাড়া ধর্মীয় কারণে আফ্রিদি কানেরিয়ার সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করতেন বলেও দাবি করেছেন তিনি।

ইতোপূর্বে পাকিস্তানের সাবেক পেসার শোয়েব আখতার জানিয়েছিলেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ায় কানেরিয়াকে বৈষম্য ও অবহেলার শিকার হতে হত পাকিস্তান দলে। এবার সেই কথার রেশ টেনেই আফ্রিদির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন কানেরিয়া।

সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক এই স্পিনার বলেন, ‘শোয়েব আখতারই প্রথম ব্যক্তি যিনি আমার সমস্যা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন। আমি তাকে স্যালুট জানাই, কারণ আমি হিন্দু হওয়ার কারণে দলে আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা তিনিই প্রথম বলেছিলেন। তবে এরপর কর্তৃপক্ষের চাপে তিনি এ বিষয়ে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু এটা সত্য যে, আমার সঙ্গে এটি ঘটেছে।’

এরপরই আফ্রিদিকে নিয়ে অভিযোগ শুরু করেন কানেরিয়া, ‘শহিদ আফ্রিদি সবসময় আমাকে বিরক্ত করত। আমরা একই বিভাগে খেলতাম। সে আমাকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখত, একদিনের একটা টুর্নামেন্টে তো খেলার সুযোগই দেয়নি।’

আফ্রিদি একজন চরিত্রহীন মানুষ ছিলেন দাবি করে কানেরিয়া জানান, তাকে সবসময় ঈর্ষার চোখে দেখতেন আফ্রিদি। 

কানেরিয়ার ভাষায়, ‘তিনি চাননি আমি দলে থাকি। তিনি একজন মিথ্যাবাদী, একজন প্রতারক… কারণ তিনি একজন চরিত্রহীন মানুষ ছিলেন। আমার মনোযোগ শুধু খেলায় ছিল। তাই এসবে গুরুত্ব দেইনি। শহিদ আফ্রিদিই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি বাকি খেলোয়াড়দের কাছে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে উসকানি দিতেন। আমি ভালো করছিলাম এবং তিনি আমাকে হিংসা করতেন। তবে আমি গর্বিত যে, আমি পাকিস্তানের হয়ে খেলেছি। আমি এই জন্য কৃতজ্ঞ।’

কানেরিয়ার দাবি, তাকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের যেসব অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, সেসব অভিযোগ ছিল মূলত আফ্রিদির ঘনিষ্ঠজনদের নামে। তাই তাকে ফাঁসানো হয়েছে, এমন দাবিই করলেন পাকিস্তানের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্পিনার। 

কানেরিয়া জানান, ‘আমার বিরুদ্ধে কিছু মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছিল। এ মামলার সঙ্গে আমার নাম যুক্ত করা হয়েছে। যিনি দোষ করেছিলেন তিনি আফ্রিদি ও অন্যান্য পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের বন্ধু ছিলেন। কিন্তু কেন আমাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে আমি জানি না।’

২০০০ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা কানেরিয়া অনুরোধ জানিয়েছেন, তার নিষেধাজ্ঞা যেন তুলে নেয়া হয়। আর তাতে তিনি ক্রিকেটে অবদান রাখার সুযোগ পাবেন। 

পাকিস্তানের হয়ে ৬১ টেস্টে ২৬১টি উইকেট নেয়া সাবেক এই স্পিনার বলেন, ‘আমি পিসিবিকে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার অনুরোধ করতে চাই, যাতে আমি আমার কাজ করতে পারি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এমন অনেক জুয়াড়ি আছে, যাদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে। আমি জানি না কেন আমার নিষেধাজ্ঞা তোলা হচ্ছে না। আমি আমার দেশের হয়ে খেলেছি এবং অন্য খেলোয়াড়দের মতো আমারও একই সুযোগ পাওয়া উচিৎ ছিল। এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছি না। আমি পিসিবির কাছে কোনো কাজ চাইছি না। তাই দয়া করে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিন, যাতে আমি শান্তিতে থাকতে পারি এবং সম্মানের সঙ্গে আমার কাজ করতে পারি।’

ওই সময়ে টেস্ট ছাড়াও পাকিস্তান দলে একমাত্র হিন্দু ক্রিকেটার হিসেবে কানেরিয়া ১৮টি ওয়ানডে ম্যাচেও খেলার সুযোগ পান। ২০০১ সালে অভিষেক হলেও ২০০৭ সাল পর্যন্ত মাত্র ১৮টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ১৫টি উইকেট পান এই লেগ স্পিনার। 

এনএস//