পদ্মাসেতু: সক্ষমতা বাড়াতে ডাবল রেল ট্র্যাকের পরামর্শ (ভিডিও)
মুহাম্মদ নূরন নবী
প্রকাশিত : ০৩:৪৬ পিএম, ১ মে ২০২২ রবিবার | আপডেট: ০৫:২৪ পিএম, ২৩ জুন ২০২২ বৃহস্পতিবার
পর্যাপ্ত প্রশস্ততা থাকার পরও পদ্মাসেতুতে রেলের একটি ব্রডগেজ লাইন বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। অথচ এখানে ডাবল ট্র্যাক বসানোরও সুযোগ আছে। দুই লাইন বসানো হলে সক্ষমতা যেমন বাড়বে, তেমনি সাশ্রয় হবে সময়ের। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার পরামর্শ দিয়েছেন পদ্মা সেতু বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য অধ্যাপক শামসুল হক।
একশ বছরেরও বেশি সময় আগে নির্মিত হয় দেশের প্রথম ও দীর্ঘতম রেলসেতু হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। এক দশমিক আট কিলোমিটারের সেতুটিতে সময়, অর্থ ও নিরবচ্ছিন্ন রেল যোগাযোগ বিবেচনায় সে সময়ই ডাবল ব্রডগেজ লাইন বসানো হয়েছিল।
যমুনায় নির্মিত হলো চার দশমিক আট কিলোমিটারের বঙ্গবন্ধু সেতু। প্রথমে রেললাইন না থাকলেও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সিঙ্গেল ব্রডগেজ লাইন বসানো হয়।
এখন অবশ্য বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে নির্মাণ কাজ চলছে ডাবল ব্রডগেজ লাইনের বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর।
পদ্মার এপাড়-ওপাড় যুক্ত করে, প্রকৃতই রেলকে গতিশীল করতে আশা জাগানিয়া পদ্মাসেতুতে দুইটি রেলট্র্যাক বসবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, এটাই সত্য পদ্মায় বসবে একটি রেলট্র্যাক।
পদ্মাসেতুর চারলেনের সড়ক অংশের নির্মাণ কাজ শেষ। জুনে যান চলাচলে উন্মুক্ত হবে। সেতুর নিচতলায় প্রায় একই প্রশস্ততা থাকায় রেলের দুটি ট্র্যাক বসতেই পারে। কিন্তু নকশায় সেই সুযোগ রাখা হয়নি। কেন সেটা বিবেচনায় নেয়া হয়নি, এ নিয়ে প্রশ্ন বিশেষজ্ঞ মহলে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্যানেল অব এক্সপার্ট সদস্য অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, একটার খরচ আর দুইটা ট্রাকের খরচ দ্বিগুণ না। এটাতো সড়ক সেতু, সড়ক সেতুর মাথা যদি চার লেনের হয় তবে তলায় একটা ট্র্যাক হবে কেন? এই ব্রিজের চওড়াটা কিন্তু ঠিকই ছিল, দুইটা ট্র্যাক সহজেই বসাতে পারে। যেই অডিট করতে যাবে, এটা তো মারাত্মক ভুল হয়ে গেছে- একটা ট্র্যাক থাকবে কেন? যেখানে দুটার বেশি ট্র্যাক রাখা, উপরে তো চার লেনের রাস্তা। তাহালে একটা ট্র্যাক হবে কেন? তার মানে খাঁচা ছিল তবে বানায়নি।”
বর্তমান পরিকল্পনায় মাঝ বরাবর লাইন বসিয়ে পাশের ফাঁকা অংশে মেইনটেইন্যান্স লাইন এবং ইউটিলিটিজ লাইন বসানোর সুযোগ রাখা হয়েছে। অথচ এই অংশটিতে অনায়াসেই একটি পূর্ণাঙ্গ লাইন বসানো যেত। আবার সেবা সংস্থার লাইনগুলো বিকল্প স্থানেও বসানো যেত।
শামসুল হক বলেন, এই কাজটা আমরা ছয় মাস আগে করে ফেলতে পারতাম, যদি দুই ট্র্যাক থাকত। এখন যতটুকু জাগা আছে ঠিক তার সেন্টারে একটা ট্র্যাক বানাতে বলেছে। তাহলে বাকী যেই জায়গাটা ভাগ হয়ে গেল, এখান দিয়ে যে একটা ফর্ক লিফ্ট নেব রেলগুলোকে ধরার জন্য, এটাই নিতে পারি না। কাস্টমাইজ করে ছোট মাপের একটা মেশিন নিচ্ছি। বড় বড় হ্যান্ডলিং ইকুইপমেন্ট নিয়ে তাড়াতাড়ি বানিয়ে ফেলতে পারতাম। আর একটা ট্র্যাক যদি হয়ে যেত, তখন এখানে ট্র্যাকের উপর চড়িয়ে দিতাম মেশিনগুলোকে। অর্ধেক সময়ে বানিয়ে দিতে পারতাম।”
কাজ অনেক এগিয়েছে, নতুন করে কিছু করার সুযোগ আছে কিনা। এ নিয়ে আরো বিস্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা হতে পারে বলেও মনে করেন এই যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ।
তিনি বলেন, “এই পদ্মা সেতু আমার। আমার প্রজেক্ট ২৬ হাজার কোটি আর রেলের প্রজেক্ট ৩৮ হাজার কোটি টাকা! আরে আমার থেকে বড় মাপ হয়ে গেছে। আবার দুই ট্র্যাক অসম্ভব!”
আরএমএ/এসি