ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বাবা-মায়ের পাশে চিরনিদ্রায় আবুল মাল আবদুল মুহিত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:০৭ পিএম, ১ মে ২০২২ রবিবার | আপডেট: ০৫:১৫ পিএম, ১ মে ২০২২ রবিবার

সিলেট নগরের রায়নগরে পারিবারিক কবরস্থানে মা-বাবার পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাবা আবু আহমদ আব্দুল হাফিজ ও মা সৈয়দা শাহার বানু চৌধুরীর পাশে রোববার (১ মে) বেলা পৌনে ৩টায় দাফন করা হয় মুহিতকে।

এর আগে সাবেক সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠে আবুল মাল আব্দুল মুহিতের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন আল্লামা মুহিবুল হক গাছবাড়ি। জানাজায় আওয়ামী লীগ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

জানাজার আগে পরিবারের পক্ষে বক্তব্য দেন মুহিতের সহোদর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এছাড়াও প্রবীণ অর্থনীতিবিদ ও রাজনীতিবিদ মুহিতের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, সাবেক হুইপ আব্দুস শহীদ এমপি, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান, সিলেট-৩ আসনের সংসদ হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাফিজ মজুমদার, সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোশাররফ হোসেন, সিলেটের ডিআইজি মো. মফিজ উদ্দিন আহমদ, এসএমপি কমিশনার মো. নিশারুল আরিফ, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন আহমদ পিপিএম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযুদ্ধো মাসুক উদ্দীন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমেদ প্রমুখ।

বক্তারা সিলেট-১ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্যের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এর আগে রবিবার দুপুরে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ফুল আর চোখের জলে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে শেষ বিদায় জানান সিলেটবাসী। মরদেহ দুপুর ১২টার দিকে বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সে করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়ার পর সেখানে এক শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মুহিতকে শ্রদ্ধা জানাতে সকাল থেকে শহীদ মিনারে আসতে শুরু করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এর আগে সেখানে কালো কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয় শ্রদ্ধা নিবেদন মঞ্চ।

প্রথমে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) একটি চৌকস দল ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আবুল মাল আব্দুল মুহিতের প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করে। পরে প্রয়াতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এরপর সাবেক অর্থমন্ত্রীর মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক ও উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদসহ আরও অনেকে।

শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান, পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

সাবেক অর্থমন্ত্রীর তিনটি জানাজার মধ্যে প্রথমটি অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর গুলশান আজাদ মসজিদে। শনিবার বেলা ১১টা ৫ মিনিটে নানা শ্রেণি–পেশার মানুষের অংশগ্রহণে জানাজা সম্পন্ন হয়। শনিবার দুপুর ২ টায় দ্বিতীয় জানাজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। এর পরপরই সেখান থেকে মরদেহবাহী ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্স সিলেটের পথে রওয়ানা হয়ে রাত ১০টার দিকে সিলেট নগরের হাফিজ কমপ্লেক্সে পৌঁছে। তবে মরদেহ আসার আগে থেকেই সেখানে দলীয় নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জড়ো হন। মরদেহ আসার পর সেখানে এক শোকাবহ পরিবেশের তৈরি হয়। সে পরিবেশ বিরাজ করে রাতভর। রাতে হাফিজ কমপ্লেক্সেই রাখা হয় মরদেহ। সিলেটের মানুষ তাকে শেষবারের মতো একনজর দেখে নেন।

উল্লেখ্য, আবুল মাল আব্দুল মুহিত শুক্রবার রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয় ৮৮ বছর। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক। ১৪ ভাইবোনের মধ্যে তৃতীয় তিনি।

আরকে//