বানের পানিতে ভেসেছে কৃষকদের ঈদ আনন্দ (ভিডিও)
মাসুমা লিসা, একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:৩৭ পিএম, ২ মে ২০২২ সোমবার
বানের জলে ভেসে গেছে হাওরের কৃষক পরিবারের ঈদের খুশি। কাঁচা-পাকা কিছু বোরো ধান কেটে ঘরে তুলতে পারলেও কাটতে পারলেও খেয়ে-পরে দিন দিন চালানোর শঙ্কায় তারা। চাঁদপুরের জেলে পরিবার এবং গাইবান্ধার চরের মানুষের অবস্থাও তাদের মতো।
বৃষ্টিপাত ও নদ-নদীর পানি কমায় সুনামগঞ্জের হাওরের কৃষকদের মাঝে এখন কিছুটা স্বস্তি। নতুন করে কোনো বাঁধও না ভাঙলেও ভেঙেছে মন।
সোনালী ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষাণ-কৃষাণিরা। কেউ ধান কাটছেন, কেউ আবার প্রখর রোদে ভিজে যাওয়া ধান শুকাচ্ছেন। এবার বানের পানিতে ভেসেছে তাদের ঈদ আনন্দ। সারা বছর খেয়ে পরে বেঁচে থাকার দুশ্চিন্তা উঁকি দিচ্ছে মনের গহীনে।
এক কৃষক বলেন, “পেট বাঁচা নিয়ে দায়, ঈদ করব কোন সময়? বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্টের মধ্যে আমরা আছি।”
সুনামগঞ্জের নয় উপজেলায় ১ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত ৩১টি হাওরের বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যায় ফসলি জমি। ছোট-বড় ১৫২টি হাওরে এবার দুই লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর বোরো ধান বুনেছিলেন কৃষকরা।
কিন্তু কৃষকরা জানান, যে এলাকায় গত বছর ১৫ মণ ধান হয়েছে, সেই এলাকায় এ বছর হয়েছে আট মণ ধান।
পানি ঢুকে আট থেকে ১০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তবে কৃষকদের দাবি, এর পরিমাণ ২২ হাজার হেক্টরেরও বেশি হবে। ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৭০ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় আনার আশ্বাস কৃষি বিভাগের।
সুনামগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, “ইতোমধ্যে আমারা ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা তৈরি করেছি। সরকারের নির্দেশনা মতাবেক প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষকদেরকে সহায়তা করা হবে।”
ঈদ নিয়ে শঙ্কায় চাঁদপুরের জেলে পরিবারগুলো। নদীতে মাছ পাওয়া না পাওয়ার উপর নির্ভর করছে তাদের ঈদ আনন্দ।
জেলেরা জানিয়েছেন, এই দুই মাসে যে অনুদান ও চাল সরকার দিয়েছে, তাতে তাদের ভালোমত চলেনি।
প্রতি বছর জাটকা ইলিশ রক্ষায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস নদীতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আসছে সরকার।
গাইবান্ধার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের মানুষের মনেও নেই ঈদের খুশি। এখনো নতুন কাপড় ও ভালো খাবারের যোগাড় করতে পারেননি অনেকেই। ইটের ভাটা, ধান কাটার কাজে পুরুষরা জেলার বাইরে গেলেও এখনও ফিরতে পারেননি অনেকেই।
আরএমএ/