ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

এক গুলিতেই শেষ হয়ে গেল ২০ বছরের প্রেম

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:৫৯ পিএম, ৩ মে ২০২২ মঙ্গলবার

ইরিনা ও ওলেহ্। ছবি টুইটার

ইরিনা ও ওলেহ্। ছবি টুইটার

২০ বছর আগে ইউক্রেনের বুচা শহরের একটি হাসপাতালে তাদের দেখা হয়েছিল। ওই হাসপাতালে কাজ করতেন ইরিনা আব্রামোভা। হাসপাতালে ছাদ সারাতে এসেছিলেন তরুণ এক যুবক। নাম ওলেহ্। কাজের ফাঁকে পেশীবহুল, সুদর্শন ওই যুবককে এক ঝলক দেখেই প্রেমে পড়ে যান ইরিনা।

তিনিই প্রথম এগিয়ে গিয়ে ওলেহ্‌র সঙ্গে কথা বলেন। তার পর নিয়মিত যোগাযোগ, দেখা-সাক্ষাৎ। প্রেম গভীর হতে এক সঙ্গে বুচায় থাকতেও শুরু করেন তারা। বিয়েও করেন। ইরিনা ওলেহ্কে ডাকতেন ‘সানশাইন’ (রৌদ্রকরোজ্জ্বল) বলে আর ওলেহ্ তার নাম দিয়েছিলেন ‘কিটি’। কিন্তু সেই কুড়ি বছরের প্রেম সেই শেষ হয়ে গেল একটি গুলিতে।

রাশিয়ান সৈন্যদের গুলিতে মারা গিয়েছেন ওলেহ্। যে দিন তাদের বাড়ি হামলা চালায় রুশ সেনা, সেই দিনটির কথা ভাবলেই বুক কেঁপে ওঠে ইরিনার। এখনও বিশ্বাস করে উঠতে পারেন না কিছুই।

৫ মার্চ সকালে রুশ সেনারা তাদের বাড়ির জানলা দিয়ে একটি গ্রেনেড ছোড়ে। বাডি়তে আগুন ধরে যায়। ওলেহ্‌র মাথায় বন্দুক ধরে তাকে বাইরে নিয়ে যায়। তাকে বাঁচাতে ছুটে বের হন ইরিনা। কিন্তু পর মূহূর্তেই দেখেন মাটিতে মুখে থুবড়ে পড়ে রয়েছেন ওলেহ্। কান থেকে বেরিয়ে আসছে রক্ত।

ইরিনার ঠাঁই হয়েছে বোমা নিরোধক আশ্রয়স্থলে। তবু মাঝে মাঝে চলে আসেন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া বাড়িকে দেখতে। দীর্ঘ ক্ষণ শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন বাড়িটির দিকে। ওলেহ্-র সঙ্গে তার সেই প্রেমের দিনগুলির স্মৃতি মনের মধ্যে তরঙ্গ তোলে।

সে দিন এক রাশিয়ান কম্যান্ডার ইরিনার বুকে বন্দুক তাক করেছিলেন। এক বার নয়। পর পর তিন বার। “গুলি করুন! গুলি করুন!”— চিৎকার করেছিলেন ইরিনা। কিন্তু তাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায় সেনারা।

ইরিনা অনুশোচনা, কেন সে দিন ট্রিগারটা টানলেন না ওই সেনা। ঘটনার পর বার কয়েক আত্মহত্যার কথাও ভেবেছিলেন তিনি। কিন্তু পরে সরে এসেছেন সেই ভাবনা থেকে। কারণ তার মতে, আত্মহত্যা পাপ। পাপ করলে তিনি স্বর্গে যেতে পারবেন না। তা হলে তো তার স্বামীর দেখা হবে না!

এখন ভালবাসার মানুষটির সঙ্গে চিরমিলনের আশায় দিন গুনছেন ইরিনা। ‍সূত্র: আনন্দবাজার

এসি