ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৩৪ পিএম, ৫ মে ২০২২ বৃহস্পতিবার
নওগাঁর সাপাহারে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের ভুল চিকিৎসা আর কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে জুলেখা বেগম(১৯) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় সাপাহার দি পপুলার ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জুলেখা উপজেলার পাইকুড় ডাঙা গ্রামের মেহেদী হাসানের স্ত্রী বলে পুলিশ জানা গেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, গত বুধবার সকাল ৭টার দিকে জুলেখার প্রসব ব্যাথা উঠলে তার পরিবারের লোকজন তাকে সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এসময় তার পরিবার দালাল চক্রের পাল্লায় পড়ে ওই প্রসূতিকে ওইদিন বেলা ১১টার দিকে দি পুপলার ক্লিনিকে ভর্তি করায়।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ক্লিনিকে কোন সার্জন, ডাক্তার এমনকি প্রশিক্ষিত কোন নার্স না থাকলেও ক্লিনিকের অদক্ষ নার্সরা প্রসূতির জরায়ুর মুখ কেটে বাচ্চা প্রসব করান ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এতে সন্তান ভূমিষ্ঠ হলেও জরায়ূর মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ক্লিনিকের লোকজন তড়িঘড়ি করে জরায়ুর মুখে চারটি সেলাই দিয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধরে চেষ্টা করে। এরপরেও রক্তক্ষরণ অব্যাহত থাকে। প্রসূতির শারিরিক অবস্থা ক্রমেই অবনতি হতে থাকলে তারা রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র স্থানান্তর না করে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নিজেরাই মন মতো চিকিৎসা প্রদান করতে থাকে। এর এক পর্যায় সন্ধ্যার দিকে ওই প্রসূতির খিঁচুনি উঠে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এই ঘটনার পর নিহত প্রসূতির পরিবারের লোকজন সুবিচারের দাবিতে লাশ নিয়ে ক্লিনিকে অবস্থান গ্রহণ করে। পরে রাত ১২টার দিকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং আশ্বাসের স্বজনরা লাশ নিয়ে ক্লিনিক ত্যাগ করে।
নিহত জুলেখার স্বামী মেহেদী হাসান জানান ক্লিনিকের লোকজনকে বার বার বলার পরও তারা ভাল কোন ডাক্তার ডেকে আমার স্ত্রীর চিকিৎসা করাই নাই। এমনকি অন্যত্র নিয়ে যেতে চাইলেও তারা নানা কৌশলে আমাকে বাধা দেন। অদক্ষ নার্স দিয়ে প্রসব করানো এবং তাদের অবহেলার কারনেই আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দাযের করব।
ক্লিনিক মালিক খাদেমুল ইসলাম বলেন, রোগীর খিঁচুনি রোগ কারণে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেও প্রসূতিকে বাঁচাতে পারিনি।
এ বিষয়ে সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেকুর রহমান সরকার বলেন, রাতেই ক্লিনিক পরিদর্শণ করে ভুক্তভোগীদের আশ্বস্থ করার পর তারা লাশ নিয়ে যান। এঘটনায় থানায় এখনও পর্যন্ত কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেআই//