ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

চলন্ত ট্রেনে ৪০ দুষ্কৃতীর মুখোমুখি একাকী গোর্খা সেনা! অতঃপর...

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:২৩ পিএম, ৭ মে ২০২২ শনিবার

ভারতীয় সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশ’ একবার বলেছিলেন, ‘যদি কেউ বলেন যে, তিনি মরতে ভয় পান না, তাহলে হয় তিনি মিথ্যা বলছেন, নয়তো তিনি এক জন গোর্খা।’ 

প্রিন্স চার্লসও বলেছিলেন, ‘পৃথিবীতে শুধুমাত্র গোর্খাদের কাছে থাকলেই জানবেন যে, আপনি নিরাপদ আছেন।’

গোর্খারা ঠিক কতটা নির্ভীক হতে পারেন তা বোঝানোর জন্য একটা উদাহরণই মনে হয় যথেষ্ট। সেই গল্প জানলে গোর্খাদের বীরত্ব সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাবেন আপনিও।

একবার এক জন গোর্খা সেনা চলন্ত ট্রেনে একাই ৪০ জন দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে লড়ে তাদের কুপোকাত করেছিলেন। ২০১০ সালের ২ সেপ্টেম্বরের ঘটনা। ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোর্খা রেজিমেন্টের সদস্য বিষ্ণুপ্রসাদ শ্রেষ্ঠ সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। রাঁচি থেকে গোরখপুরগামী মৌর্য এক্সপ্রেসে চড়েন তিনি।

মধ্যরাতে ৪০ জন সশস্ত্র ডাকাত ট্রেনে উঠে লুটপাট শুরু করে। বন্দুক এবং ছুরি দেখিয়ে যাত্রীদের ছিনতাই করতে শুরু করে তারা। প্রথমদিকে সব কিছু দেখেও চুপ করে ছিলেন বিষ্ণুপ্রসাদ।

কিন্তু দুষ্কৃতীরা ১৮ বছর বয়সী এক মেয়েকে উত্যক্ত করতে শুরু করলে বিষ্ণুপ্রসাদ নিজের মাথা আর ঠিক রাখতে পারেননি। ব্যাগ থেকে নিজের খুখরি (ছুরি) বের করে ওই ৪০ দুষ্কৃতীর ওপর একাই ঝাঁপিয়ে পড়েন। দুষ্কৃতীরা পাল্টা হামলা চালালেও তার তেজের কাছে টিকতে পারেনি।

বিষ্ণুপ্রসাদের খুখরির আঘাতে মৃত্যু হয় ৩ ডাকাতের, আহত হয় ৮ জন। মারমুখী বিষ্ণুপ্রসাদকে দেখে পালিয়ে যায় বাকি ডাকাতরাও। তাদের হাতিয়ে নেয়া ২০০টি মোবাইল ফোন, ৪০টি ল্যাপটপ, প্রচুর পরিমাণে গহনা এবং প্রায় সাড়ে সাত লাখ নগদ টাকাও ফেলে যায় তারা।

দুষ্কৃতীদের সঙ্গে লড়াইয়ের সময় বিষ্ণুপ্রসাদের বাঁ-হাতটা গুরুতর ভাবে জখম হয়। নির্যাতিতা ওই যুবতীরও ঘাড়ের একটি অংশ কেটে যায়।

পরে নির্যাতিতার পরিবার উপকারের বদলে টাকা দিতে চাইলে বিষ্ণুপ্রসাদ তা নিতে অস্বীকার করে বলেন, ‘যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুদের সঙ্গে লড়াই করি। এটা আমার কর্তব্য। ট্রেনের মধ্যেও দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো আমার কর্তব্য ছিল।’

নির্ভীক হওয়ার পাশাপাশি গোর্খা সেনারা শক্তি এবং সাহসেরও পরিচায়ক। তাদের শক্তি এবং সাহসের বিষয়ে বিতর্কিত ওসামা বিন লাদেনও একবার বলেছিলেন, ‘গোর্খারা পাশে থাকলে আমি মার্কিন বাহিনীকেও পরাজিত করতে পারতাম।’

জার্মান নেতা হিটলারও গোর্খাদের সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘আমার কাছে যদি গোর্খা বাহিনী থাকত, পৃথিবীর কোনো বাহিনীই আমাকে পরাস্ত করতে পারত না।’ সূত্র- আনন্দবাজার অনলাইন

এনএস//