ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

ভিন্ন পরিবেশে জীবনযুদ্ধ (ভিডিও)

মানিক শিকদার, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১৬ পিএম, ৮ মে ২০২২ রবিবার | আপডেট: ১২:৫২ পিএম, ৮ মে ২০২২ রবিবার

শৈশব কাটে মায়ের কোলে। নির্মম পরিহাসে পরিবার থেকে বিচ্যুত হয় সেই আদরের সন্তান। অবজ্ঞা-অবহেলায় গন্তব্য হয় অজানার পথ। ভিন্ন পরিবেশে জীবন যুদ্ধের প্রসঙ্গটির নাম হিজড়া।

শাকিলা ও মিম, জন্ম ছেলে সন্তান রূপে। পরে আবিস্কার হয় তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়া হিসেবে। সমাজের বঞ্চনা অবহেলায় ছাড়তে হয় স্বাভাবিক জীবন। পরিজনের পর ছাড়তে হয় মাকে।

১২ বছর বয়সে শাকিলা আশ্রয় নেয় গুরু মা রবির কাছে। এই মা-ই তাঁকে আগলে রেখেছেন। বড় করেছেন সন্তান স্নেহে। 

শাকিলা জানান, “পরিবারের সমস্যা তো হয়ই। এখন আমি আর মায়ের সঙ্গে থাকি না, দূরে চলে এসেছি।”

রক্তের বন্ধন হয়তো নেই। কিন্তু কমতি নেই আপত্য স্নেহ, মাতৃত্ববোধে।

রবি বলেন, “আমি ওদেরকে জড়িয়ে ধরে মায়ের তৃপ্তিটা অনুভব করলাম।”

একসময় এই মাও কৈশোরে ছেড়ে এসেছিলেন তার মাকে। আশ্রয় নিয়েছিলেন আরেক হিজড়ার বুকে। পরিবারের মঙ্গল চিন্তায় ঘর ছাড়া রবি এখন স্বনির্ভর। হিজড়া সন্তানদের সুখের জন্য করতে চান সর্বোচ্চ ত্যাগ।

রবি বলেন, “মায়ের কথা অনেক মনে পড়ে। যখন কাউকে দেখি মাকে সেবা-যত্ন করতে তখন আমারও ইচ্ছা করে যে পাশে থেকে মায়ের এরকম সেবা-যত্ন করতে পারতাম।”

হিজড়া কল্যাণ ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, দেশে প্রায় ১৫ লাখ হিজড়া আছে। তাদের বড় অংশই পরিবার বিচ্যুত। যাদের আশ্রয় মাতৃরূপে জ্ঞান করা হিজড়াদের ডেড়ায়।

হিজড়া কল্যাণ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট আবিদা সুলতানা মিতু বলেন, “হিজড়াও চায় আমাদের সন্তানদের মতো দুধে-ভাতে থাকতে।”

সামাজিক সচেতনতাই পারে এসব হিজড়াদের কাজে লাগাতে।

আবিদা সুলতানা মিতু বলেন, “গর্ববোধ করি যে সমস্ত হিজড়ারা আমাকে মা বলে ডাকে। বিষয়টি আমার কাছে খুব ভাল লাগে।”

সমাজের বাধায় কোন মায়ের কোল যেনো খালি না হয়, কোন সন্তানকে যেন দূরে যেতে না হয় পরিবার থেকে- এমন চাওয়া হিজড়া জনগোষ্ঠীর।

এএইচ/