হেরোইন পাচারের স্বর্গরাজ্য আলাতুলি (ভিডিও)
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১১:৪৫ এএম, ১১ মে ২০২২ বুধবার
হেরোইন পাচারের স্বর্গরাজ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্ত ঘেঁষা ইউনিয়ন আলাতুলি। মাঝেমধ্যে আটক হয় চুনোপুঁটিরা। ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে গডফাদাররা।
আলাতুলীর কোদালকাটি-জেলেপাড়া গ্রামের রানী খাতুন। একবার ঢাকা যাওয়ার সময় তার ব্যাগ পাল্টে নেয় হেরোইন পাচারের এক গডফাদার। চেকপোস্টে পুলিশ তাকে মাদকসহ গ্রেফতার করলে এক বছরের সাজা হয়। তছনছ হয়ে যায় রানী খাতুনের জীবন।
রানী বলেন, “এখন পর্যন্ত হাজিরা দিচ্ছি। ৩১ বছর চলে গিয়েছে।” তার মা জানান, “এই কেসের জন্য তার বিয়েশাদি হয়নি।”
একই গ্রামের শরিফুল ইসলাম। হেরোইন পাচার মামলায় মৃত্যুদণ্ড হয় তার। কারাগারে বন্দি আছেন। সংসার-সামাজিকতা বলে তার আর কিছুই নেই। বাড়িতে পাগলপ্রায় তার মা-বাবা।
শরিফুলের বাবা-মা বলেন, “ধরা পড়ার শুনেছি যে, সেন্টু মেম্বার হেরোইন দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছে। ১০ বছর ধরে জেলে আছে সে।”
এমন অনেক গল্প আলাতুলি গ্রামের ঘরে ঘরে।
প্রত্যন্ত এই সীমান্ত দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে চলে মাদক পাচার। প্রলোভনে পড়ে অনেকেই জড়িয়ে যাচ্ছেন এ কাজে। আবার কাউকে ফাঁসিয়েও দেয়া হয়। তাদের বিচার হলেও নেপথ্যের বিগ ফিসদের ধরে না আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।
ওই এলাকার এক যুবক জানান, “একলোক দুটি ব্যাগ দিয়েছিল, সেই ব্যাগ দুটি নিয়ে এসেছিলাম। পথিমধ্যে বিজিবি ধরে চালান দিয়েছিল।”
মাদক পাচারের বড় কারবারী হিসেবে আলাতুলির সাবেক ইউপি সদস্য সেন্টু মেম্বার বহু আগে থেকেই তালিকাভুক্ত। গ্রামের মানুষের মুখে মুখে তার নাম। তবে সেন্টু মেম্বারের দাবি, তিনি এখন ভালো হয়ে গেছেন।
সাবেক ইউপি সদস্য জামাল হোসেন সেন্টু বলেন, “কোন চক্রান্ত করে কোন লাভ হবে না। আমি যদি দোষী হই তা আইন দেখে নিবে।”
এ বিষয়ে প্রশাসন বরাবরই নির্বিকার। ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি না হলেও মুঠোফোনে সদর থানার ওসি জানান, মাদক পাচার রোধে সীমান্ত এলাকায় কড়া নজরদারি চলমান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ওসি মোজাফফর হোসেন বলেন, “যারা মাদক ব্যবসা করে তারা কিন্তু বিভিন্ন সময়ে আইনের আওতায় আসছে। বড় বড় মাদক কারবারি মামলাভুক্ত হয়েছে।”
প্রকৃত অপরাধী গডফাদারদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলে সীমান্তে মাদক পাচার রোধ সম্ভব বলে মনে করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসী।
এএইচ/