ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৯ ১৪৩১

প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে ১১ হাজার কোটি টাকার এক্সপ্রেসওয়ে (ভিডিও)

সাইদুল ইসলাম, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:২১ পিএম, ১৫ মে ২০২২ রবিবার

সঠিক তদারকির অভাবে বিপদজনক, ঝুঁকিপূর্ণ এবং প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানো, মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে বাসে যাত্রী তোলা ও নামানো, অটোরিকশা ঢুকে পড়া এবং যত্রতত্র মানুষ পারাপারসহ নানা অসঙ্গতিতে দেশের প্রথম ও একমাত্র এক্সপ্রেসওয়েটিতে ঝরছে তাজাপ্রাণ।

১১ হাজার তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এক্সপ্রেসওয়েটির উদ্বোধন করা হয় ২০২০ সালের মার্চে। মাত্র দুবছরেই সেটি এখন দেশের সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনাপ্রবণ সড়ক-মহাসড়কের একটি। 

গত বছর এক্সপ্রেসওয়েটিতে ১৯৬টি দুর্ঘটনায় ৭৪ জন নিহত এবং ২৬৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। চলতি বছরের কেবল জানুয়ারিতেই দুর্ঘটনার সংখ্যা ২৬টি, যাতে ছয়জন নিহত এবং ৫২ জন আহত হন। দুর্ঘটনায় পড়া যানবাহনের মধ্যে মোটরসাইকেলই বেশি।

এক্সপ্রেসওয়ের কোনো বৈশিষ্ট্যই মানা হয় না। কোথাও থামার সুযোগ না থাকলেও হঠাৎ হঠাৎ রাস্তায় দাঁড়িয়ে যায় বাইক, ট্রাক, বাস বা প্রাইভেটকারসহ সব ধরনের যানবাহন, গতিসীমাও লঙ্ঘন করে ভীষণভাবে। নির্ধারিত বাসস্ট্যান্ডে যায় না কেউই, বরং হরহামেশাই মাঝরাস্তায় যাত্রী ওঠায়-নামায়।

কর্তব্যরত এক পুলিশ সদস্য জানান, “রানিংয়ের মধ্যে সাময়িক কেউ টুকটাক দাঁড়ায়, তাছাড়া অন্য কিছু নয়।”

হাঁটাও যেখানে নিষিদ্ধ, সেখানে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন অসংখ্য মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, “ডিভাইডার থাকার মধ্যেও এপাশ থেকে ওপাশে লাফিয়ে লাফিয়ে যায় মানুষ।”

ধীরগতির গাড়ি নিষিদ্ধ হলেও বিভিন্নস্থানে অবাধে চলছে রিকশা, ভ্যান ও পিকআপ। আইন ভঙ্গ করে যাচ্ছে একপাশ থেকে অন্যপাশেও।

এক চালকরা জানান, “সবাই যাচ্ছে তাই আমরাও যাচ্ছি।”

আবার নিয়ম না থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন স্থানে গাড়ি দাঁড় করাচ্ছে খোদ পুলিশই। কিন্তু কেন সে প্রশ্নের উত্তর নেই পুলিশ সদস্যদের কাছে।

পুলিশ জানেনা এক্সপ্রেসওয়ের মাঝ রাস্তায় গাড়ী দাঁড় করানো যাবেনা। 

এক্সপ্রেসওয়ের দ্বিতীয় ধলেশ্বরী সেতুর টোলপ্লাজার আধুনিকায়ন না হওয়ায় গাড়ির দীর্ঘ জট লেগে যায়। এ বিষয়ে জানেন না খোদ কর্মকর্তারাই। 

একপাশ বন্ধ রেখে চাঁদাবাজির মতো টোল তোলা হচ্ছে এক্সপ্রেসওয়ের পোস্তগোলা ব্রিজে। তবে সদুত্তর দিতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।

তারা জানান, “রোড কখনও বন্ধ থাকে না।”

কঠোর ও যথাযথ তদারকিতে এক্সপ্রেসওয়েটি দুর্ঘটনা বা ঝুঁকিমুক্ত নিরাপদ যাত্রার উদাহরণ হোক- এমনটা চান যাত্রীরা। 

এএইচ/