ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

কৃষকের সোনালি ফসল ঘরে তুলতে স্কুল শিক্ষার্থীদের উদ্যোগ

নড়াইল প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৪:০৫ পিএম, ১৫ মে ২০২২ রবিবার | আপডেট: ০৪:০৬ পিএম, ১৫ মে ২০২২ রবিবার

কারো মাথায় টোপা, কারো গামছা বাঁধা, কেউ আবার কাস্তে হাতে। বোরো ধানের ভরা মওসুমে অসহায় কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে এমন ব্যতিক্রমী ও মানবিক উদ্যোগ নিয়েছেন নড়াইলের গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

রোববার (১৫ মে) দুপুরে তিনদিনব্যাপী ধানকাটা উৎসব শেষ হয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে মাঠে নেমে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

শুধু ধানকাটাই নয়, তারা কৃষকের বাড়িতেও পৌঁছে দিয়েছেন সোনালি ফসল। তিনদিনে প্রায় ১৫ বিঘা জমির ধান ক্ষেত থেকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন তারা। 

এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগে দারুণ খুশি এলাকার কৃষকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ।

গুয়াখোলা গ্রামের প্রতাপ কুমার পাল জানান, বর্তমানে ধানকাটা শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। তিনবেলা খাবারসহ জনপ্রতি শ্রমিকের মূল্য গুণতে হচ্ছে এক হাজার টাকা। তাও ঠিকমত পাওয়া যাচ্ছে না। গুয়াখোলা স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা মিলে আমার ৬০ শতক জমি ধান প্রায় ১০ মিনিটে কেটে দিয়েছেন। এই দুর্যোগের সময় তাদের পাশে পেয়ে আমি ভীষণ খুশি। 

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সৌমিত্র গোস্বামী বলে, ঘূর্ণিঝড় অশনির কারণে কৃষকদের বেশ ক্ষতি হয়েছে। তাদের ফসল দ্রুত ঘরে তুলতে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছি আমরা।

শিক্ষক তাপস পাঠক ও স্বপন কুমার সেন বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টির কারণে অধিকাংশ জমিতে পানি জমে গেছে। ধানে অঙ্কুরোদগম হয়ে যাচ্ছে, এ সংকটময় মুহূর্তে এলাকার কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছি। সবসময় সৃজনশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই আমরা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মন্ডল বলেন, বোরো ধানের ভরা মওসুমে বর্তমানে শ্রমিক সংকট চলছে। পাশাপাশি ঝড়ের প্রভাবে গত তিন থেকে চারদিন ধরে মাঝে-মধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে পানি জমে অনেক ধানক্ষেত নষ্ট হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিলে গরিব কৃষকদের ধান কেটে দিয়েছে। 

শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ তিনদিন ধানকাটার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে শনিবার সংরক্ষিত ছুটি ও রোববার বৌদ্ধপূর্ণিমার ছুটি মিলে তিনদিন ধানকাটা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়। এই তিন দিনে অন্তত ২০জন কৃষকের প্রায় ১৫ বিঘা জমির ধান বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক।

এএইচ/