ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

২ বছরে অবৈধভাবে দুই শতাধিক জ্যামার বিক্রি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:১৩ পিএম, ১৫ মে ২০২২ রবিবার

দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও নাশকতার পরিকল্পনায় গত দুই বছরে দেশে দুই শতাধিক জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বিক্রির তথ্য পেয়েছে র‌্যাব। এদের বেশ ক’জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামও জেনেছে র‌্যাব।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ জ্যামার, রিপিটার ও নেটওয়ার্ক বুস্টারসহ দুজনকে গ্রেপ্তারের পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে র‍্যাব।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. আবু নোমান (২৮) ও সোহেল রানা (৩৭)। এ সময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক জ্যামার ৪টি, জ্যামার এন্টিনা ২৪টি, এসি অ্যাডাপ্টর ৪টি, পাওয়ার ক্যাবল ৩টি, মোবাইল নেটওয়ার্ক বুস্টার ৩টি, বুস্টারের আউটডোর এন্টিনা ৯টি, বুস্টারের ইনডোর এন্টিনা ২৬টি, বুস্টারের ক্যাবল ৩৭টি ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।

রোববার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-৩ অধিনায়ক (সিও) কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

ব্রিফিংয়ে র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি, অবৈধ জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রয়কারী চক্রের কিছু সদস্য দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বিনা অনুমতিতে অবৈধ জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রয় করে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে র‌্যাবের একটি দল বিটিআরসির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে শনিবার রাত পৌনে ১টায় মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রয়কারী ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করে।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা র‌্যাবকে জানিয়েছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রয় করে আসছে। গ্রেপ্তার নোমানের ‘আইটি স্টল.কম.বিডি’ নামে ই-কমার্স ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ রয়েছে। সোহেল রানার ‘সোআইএমবিডি’ নামে ই-কমার্স ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ রয়েছে।

র‌্যাব জানিয়েছে, ই-কমার্স ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজের মাধ্যমে গ্রেপ্তারকৃতরা আইপি ক্যামেরা, ডিজিটাল ক্যামেরা ও ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশের পাশাপাশি উচ্চমূল্যে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টারসহ এর যন্ত্রাংশ লাইসেন্স ছাড়া অবৈধভাবে বিক্রি করে থাকে।

র‌্যাব অধিনায়ক জানান, জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার টুজি, থ্রিজি এবং ফোরজি মোবাইল নেটওয়ার্কের কার্যক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে সক্ষম। তাদের ক্রেতা বিভিন্ন বহুতল ভবনের বাসিন্দা, মসজিদ কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও বিভিন্ন অপরাধীরা অপরাধ করার উদ্দেশ্যে উচ্চমূল্যে এসব অবৈধ ডিভাইস ক্রয় করে থাকে।

বিক্রয় ও আমদানি নিষিদ্ধ এসব পণ্য কিভাবে দেশে আসছে জানতে চাইলে র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘বৈধ আমদানিকারকদের মাধ্যমে অধিক পরিবহন মূল্য পরিশোধ করে বৈধ মালামালের আড়ালে তারা এসব অবৈধ যন্ত্রাংশ আমদানি করছে। এরপর চাহিদা মোতাবেক অনলাইন ফ্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে উচ্চমূল্যে বিক্রি করে আসছিল।’

তাদের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তর পায়নি র‌্যাব। ‘যেহেতু উত্তর পাইনি, সে কারণে র‌্যাব ধারণা করছে, অবশ্যই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পরিকল্পনা ছিল, সঙ্গে নাশকতার ষড়যন্ত্রও উড়িয়ে দেয়া যায় না। দেশের স্থিতিশীল পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য এসব অবৈধ জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রি করা হচ্ছিল।’ বলেন লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন।

‘পাশাপাশি অধিক মুনাফা লাভের আশায় তারা এসব বিক্রি করে আসছিল’ যোগ করে র‌্যাব অধিনায়ক বলেন, ‘বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে আরও তথ্য পাওয়া যাবে।’

কাদের কাছে এসব অবৈধ ডিভাইস বিক্রি করা হয়েছে জানতে চাইলে লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দুই বছরে দুই শতাধিক জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রয় করা হয়েছে। আমরা বিস্তারিত তালিকা পাইনি। তবে বেশ ক’জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম আমরা জেনেছি। তথ্য প্রমাণ নিশ্চিত হওয়ার পর খুব শিগগির অভিযান চালানো হবে।

আরকে//