ঋণ খেলাপির খাতায় নাম লেখালো শ্রীলঙ্কা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০১:০৫ পিএম, ২০ মে ২০২২ শুক্রবার | আপডেট: ০১:২১ পিএম, ২০ মে ২০২২ শুক্রবার
অর্থনৈতিক সঙ্কটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কা তার স্বাধীনতার ইতিহাসে প্রথমবারের মত নাম লেখালো ঋণ খেলাপির খাতায়।
বৃহস্পতিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ঋণের সুদ বাবদ ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারের কিস্তি পরিশোধে ৩০ দিন অতিরিক্ত সময় পেয়েছিল কলম্বো। বুধবার সেই সময় শেষ হলেও কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে দেশটির সরকার।
শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, তাদের দেশ বর্তমানে খেলাপি হওয়ার পর্যায়েই রয়েছে।
বৃহস্পতিবার কর্মদিবসের শেষভাগে বিশ্বের অন্যতম বড় দুটি ক্রেডিট রেটিং সংস্থাও ঘোষণা করেছে যে শ্রীলঙ্কা ঋণ খেলাপি হয়েছে।
সাধারণত কোনো সরকার ঋণদাতাদের কাছে সম্পূর্ণ ঋণ বা ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে ওই দেশ খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হয়। তাতে বিনিয়োগকারীদের কাছে দেশের সুনাম নষ্ট হয়, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে প্রয়োজনীয় ঋণ সংগ্রহ করতে বেগ পেতে হয়। অন্যদিকে দেশের মুদ্রা ও অর্থনীতির ওপর জনগণের আস্থা আরও দুর্বল হয়ে যায়।
শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পি নন্দলাল ভিরাসিংহের কাছে বৃহস্পতিবার জানতে চাওয়া হয়েছিল, খেলাপি হওয়ার পর দেশটির অবস্থান এখন কোথায়?
জবাবে তিনি বলেন, “আমার অবস্থান খুবই স্পষ্ট, আমরা জানিয়েছি যে তারা (ঋণদাতারা) যতক্ষণ পর্যন্ত ঋণ পুনর্গঠন করবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা তা পরিশোধ করতে পারব না। সুতরাং এটাকে আপনারা বলতে পারেন প্রতিরোধমূলক খেলাপি হওয়া।”
তিনি বলেন, “এর কারিগরি সংজ্ঞাও থাকতে পারে, তাদের দিক থেকে তারা একে খেলাপি হিসেবেও বিবেচনা করতে পারে। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট, ঋণ পুনর্গঠন না করা পর্যন্ত আমরা তা শোধ করতে পারব না।”
ঋণদাতাদের কাছে ৫ হাজার কোটি ডলারের বেশি ঋণ পুনর্গঠন করার আবেদন করেছে শ্রীলঙ্কা।
মহামারীতে পর্যটন ব্যবসায় ধস শ্রীলঙ্কার বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমিয়ে দিয়েছিল। এরপর ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তোলে।
এর মধ্যে কর কমিয়ে সরকার জনপ্রিয়তা ধরে রাখার চেষ্টা করলে রাজস্ব আয়েও টান পড়ে। রিজার্ভ তলানীতে নেমে আসায় ওষুধ, জ্বালানি ও অন্যান্য নিত্য পণ্যের সংকট সৃষ্টি হয়।
খেলাপি দশা থেকে উদ্ধার পেতে শ্রীলঙ্কা সরকার এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার আইএমএফের মুখপাত্র জানান, তাদের আলোচনা মঙ্গলবার শেষ হতে পারে।
এর আগে শ্রীলঙ্কার সরকার জানিয়েছিল, এ বছরের জন্য তাদের ৪০০ কোটি ডলারের মত অর্থ দরকার। তবে গভর্নর ভিরাসিংহে সতর্ক করে বলেছেন, এরইমধ্যে বেড়ে যাওয়া মূল্যস্ফীতির হার সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়তে পারে।
শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রমাসিংহে শুক্রবার বিবিসিকে বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর আগে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
এসবি/