পুলিশের হাত বিচ্ছিন্নকারী কবির আটক
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:৩৪ পিএম, ২০ মে ২০২২ শুক্রবার
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় দায়ের কোপ দিয়ে পুলিশ কনস্টেবল জনি খানের হাত বিচ্ছিন্নকারী মূল আসামি সন্ত্রাসী কবির আহমেদকে আটক করা হয়েছে। কবির একজন চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি। সে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় জমি দখলসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে লোহাগড়ার পাহাড়ি এলাকায় র্যাব অভিযান চালিয়ে অস্ত্র, গুলি ও মাদকসহ তাকে গ্রেফতার করে।
শুক্রবার (২০ মে) চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে র্যাব-৭-এর ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা বলেন।
খন্দকার আল মঈন জানায়, পুলিশের হাতের কব্জি বিচ্ছিন্নের এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হলে দেশব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বর্ণিত ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৭ এর একটি আভিযানিক দল লোহাগাড়া থানাধীন বড় হাতিয়ার গহীন পাহাড়ি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে লোহাগাড়ার মৃত আলী হোসেনের পুত্র কবির আহমদ (৪৩) এবং তার সহযোগী মৃত মোস্তাক আহাম্মদের পুত্র কফিল উদ্দিন (৩০)-কে গ্রেপ্তার করে।
আরও জানায়, অভিযান চলাকালে কবির তার নিকট থাকা অস্ত্র দিয়ে র্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে একজন র্যাব সদস্য আহত হন। র্যাব পাল্টা গুলি চালায়। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল হতে কবিরকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। উক্ত অভিযানে জব্দ করা হয় একটি দা, একটি ওয়ান শুটার গান, ৩ রাউন্ড গুলির খোসা, ৩ রাউন্ড তাজা গুলি, ২ টি হাসুয়া, একটি ছুরি, ১৮০ পিস ইয়াবা, দু’টি মোবাইল ও দু’টি সীম কার্ড। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা বর্ণিত ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।
এর আগে গত ১৫ মে সকালে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার একটি মামলার আসামি কবির আহমদকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কবির অস্ত্রসহ ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশ সদস্যদের ওপর চড়াও হয়। প্রথমে সে তার বাসা শনাক্তকারী ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে।
পরবর্তীতে পুলিশ সদস্য জনি তাকে বাধা দিলে কবির তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে জনি খানকে সজোরে আঘাত করে বাম হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং ঘটনাস্থলে থাকা অন্য পুলিশ সদস্য শাহাদত হোসেনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করে দ্রুত ঘটনাস্থল হতে পলায়ন করে।
উপস্থিত অন্যান্য পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আহত পুলিশ সদস্যদের লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। তন্মধ্যে পুলিশ সদস্য জনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরবর্তীতে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য র্যাবের হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় এনে মোহাম্মদপুরে আল মানার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১৬ মে ডা. সাজেদুল রেজা ফারুকী দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা ৪০ মিনিট সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন কব্জিটি জোড়া লাগাতে সক্ষম হন। বর্ণিত ঘটনায় লোহাগড়া থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়।
এসি