‘বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে তা আত্মঘাতী হবে’(ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৪৯ পিএম, ২১ মে ২০২২ শনিবার | আপডেট: ০৯:৫৬ পিএম, ২১ মে ২০২২ শনিবার
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে তা অর্থনীতির জন্য আত্মঘাতী হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। সেইসঙ্গে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব আপাতত স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘‘কোভিড মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বেড়েছে। একইসঙ্গে শিপিং ও পরিবহন ব্যয় বাবদও বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। যে কারণে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় রাপ্তানিমুখী খাতের জন্য বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে তা অর্থনীতির জন্য আত্মঘাতী হবে।’’
শনিবার এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘‘বিদ্যুতের প্রস্তাবিত ট্যারিফ বৃদ্ধির আবেদনে দাম বাড়ানোর অর্থনৈতিক প্রভাব পূর্ণাঙ্গরূপে বিশ্লেষণ করা হয়নি। যে কারণে বিইআরসির এই আবেদন আইন অনুযায়ী ত্রুটিপূর্ণ। তাই এই আবেদন বিবেচনা করা উচিত নয়। কোভিড মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। এ কারণে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো যৌক্তিক হবে না। বরং বিদ্যুৎ খাতের তহবিল থেকে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যেতে পারে।’’
আপাতত গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব স্থগিত করে বিরাজমান বৈশ্বিক সংকটময় পরিস্থিতি প্রশমিত হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার সুপারিশ করেন জসিম উদ্দিন।
সরবরাহ মূল্য বিদ্যমান হারে বজায় রেখে বাড়তি ব্যয় সরকারি ভর্তুকির মাধ্যমে সমন্বয় করার প্রস্তাব দেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এছাড়াও জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় আমূল সংস্কার, অনিয়ম, অপচয়, অবৈধ সংযোগসহ যাবতীয় অপব্যবস্থার নিরসন, অদক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করা, অতিরিক্ত ৩০ শতাংশ রিজার্ভ বিদ্যুতের সংস্থান করে অতিরিক্ত উৎপাদন বন্ধ করে খরচ কমিয়ে আনা, ক্যাপাসিটি চার্জ বাতিল করে অলস উৎপাদনকারীকে অর্থ পরিশোধ বন্ধ করা, ভর্তুকি প্রাপ্ত জ্বালানি খাতের ওপর শুল্ক মূসক প্রত্যাহার বা প্রয়োজনে ন্যুনতম শুল্ক আরোপ করা, সকল খাতের জন্য গ্যাসের সাধারণ হার নির্ধারণের সুপারিশ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
এসময় তিনি এসডিজি-৭ অনুযায়ী সুলভ, উন্নত নিরবচ্ছিন্ন ও টেকসই জ্বালানি ও বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে ২০ বছর মেয়াদী রোডম্যাপ প্রণয়নের আহ্বান জানান।
বিসিআই সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ‘‘বর্তমান ডলার সংকটের এই সময়ে স্থানীয় শিল্পের সক্ষমতা বেশি প্রয়োজন। এমন মুহূর্তে বিদ্যুতের দাম বাড়ালে বেশিরভাগ টেক্সটাইল কারখানা মুখ থুবড়ে পড়বে। যা কর্মসংস্থান ও অর্থনীতির জন্য আত্মঘাতী হবে।’’
এফবিসিসিআই পরিচালক ও বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ‘‘সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে এই সংকটময় মুহুর্তে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।’’
বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মেদ হাতেম জানান, রপ্তানিখাত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। এমন অবস্থায় বিদ্যুতের দাম বাড়লে এই প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে।
সংবাদ সম্মেলেন আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মানোয়ার হোসেন, নাসিব সভাপতি মীর্জা নুরুল গণী শোভন ও রিহ্যাবের সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন।
এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সাবেক প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী, সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, সালাহউদ্দিন আলমগীর, মো. হাবীব উল্লাহ ডন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমএম//এনএস//