ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৮ ১৪৩১

সুন্দরবনে ৩ মাস মাছ ধরা ও পর্যটন বন্ধ ঘোষণা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৫৬ পিএম, ২৮ মে ২০২২ শনিবার

পূর্ব সুন্দরবনের নদী-খালে এবার তিন মাসের জন্য মাছ ধরা ও পর্যটন বন্ধ করা হয়েছে। আগামী ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মাছ ধরা ও পর্যটন নিষিদ্ধ করে নির্দেশনা জারি করেছে বন বিভাগ। মাছ ও বণ্যপ্রাণীর প্রজনন বাড়ানোর জন্য বন বিভাগের এমন সিদ্ধান্ত। পূর্ব সুন্দরবনের ডিএফও (বিভাগীয় বনকর্মকর্তা) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

স্থানীয় জেলেরা বলছেন, বন বিভাগের এমন সিদ্ধান্তে বেকার হয়ে অর্থসংকটে পড়বেন কয়েক হাজার জেলে এবং পর্যটনের সঙ্গে জড়িত পরিবার।

জানা গেছে, সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ২০১৯ সাল থেকে বন বিভাগ এই বনে প্রতিবছর ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত গোট সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ থাকে। গত বছরও দুই মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকলেও এই বছর তা আরও এক মাস বাড়ানো হয়েছে। এ সময়ে সুন্দরবনে বন্ধ করা হয়েছে সব ধরণের পর্যটকের প্রবেশ।

সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে জলভাগের পরিমান ১৮শ' ৭৪. ১ বর্গকিলোমিটার। যা সমগ্র সুন্দরবনের আয়তনের ৩১. ১৫ ভাগ। সুন্দরবনের জলভাগকে বলা হয় মৎস্য সম্পদের ভান্ডার। সুন্দরবনের জলভাগে ২১০ প্রজাতির সাদামাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া, ৪৩ প্রজাতির মালাস্কা ও ১ প্রজাতির লবস্টার রয়েছে। জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাস মাছের প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনের নদী খালে থাকা বেশির ভাগ মাছের ডিম থেকে জন্ম নিয়ে থাকে মাছ। যার ফলে এ সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকলে সুন্দরবনের নদী খালে যেমন মাছ বৃদ্ধি পাবে, তেমনি অন্যান্য প্রাণি, উদ্ভিদসহ সব জীবের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে জানিয়েছে সুন্দরবন বিভাগ।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন জানান, সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্লানেলের (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে সুন্দরবন বন বিভাগ এই বনে প্রতিবছর ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত গোট সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ থাকে। এবারও মৎস্য বিভাগের সাথে সমন্নয় করে এই সময় এরা এক মাস বাড়িয়ে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করে বন মন্ত্রণালয়। এই তিন মাস সমগ্র সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধের পাশাপাশি পর্যটক প্রবেশেও নিষেজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে সুন্দরবনে প্রবেশের সব ধরণের পাশ-পারমিট। এ সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকলে সুন্দরবনের নদী খালে যেমন মাছ বৃদ্ধি পাবে।

এদিকে সুন্দরবনে পর্যটন ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন ও জামাল হোসেন বলেন, করোনার ধাক্কা এখনো কাটেনি। গত দুই বছরে তাদের ব্যবসায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। এরপর আবার মাছ আহরণের সাথে তিন মাস পর্যটক প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো, এটা কেমন সিদ্ধান্ত?
কেআই//