স্বামীর খোঁজ নিতে গিয়ে মেম্বরের যৌন হয়রানির শিকার!
মোংলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৬:৪২ পিএম, ৩১ মে ২০২২ মঙ্গলবার
অভিযুক্ত মেম্বর প্রণব কুমার মজুমদার
মোংলায় স্বামীর খোঁজ নিতে গিয়ে এক ইউপি সদস্যের (মেম্বর) যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন এক নারী। অভিযুক্ত উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর প্রণব কুমার মজুমদার শুধু যৌন হয়রানিই করেননি, ১৯ দিন ধরে ওই নারীকে ফোন দিয়ে কুপ্রস্তাবও দেন। যার অডিও কল রেকর্ড এরই মধ্যে ফাঁস হয়েছে।
এ ঘটনায় মেম্বরর প্রণব কুমার মজুমদারকে আসামি করে মঙ্গলবার (৩১ মে) মোংলা থানায় লিখিত এজাহার দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছেও একটি অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের খাসেরডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মাখন লাল দাসের পুত্রবধূ ইতি রানী দাস তার অভিযোগে বলেন, তার স্বামী সঞ্জয় কুমার দাস দীর্ঘদিন ধরে ইউপি মেম্বর প্রণব কুমার মজুমদারের সঙ্গে থেকে কাজ করতেন। কিন্তু গত দুই মাস ধরে তার কোনো খোঁজ না পাওয়ায় ওই মেম্বরের দ্বারস্থ হন ইতি রানী দাস। এরপর থেকেই তাকে ওই মেম্বর বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি দিয়ে যৌন হয়রানি করে আসছে। তাতে সাড়া না দেয়ায় তার বাড়ীতে এসেও বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করতো মেম্বর প্রণব।
এক পর্যায়ে গত ৭ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ টানা ১৯ দিন ওই নারীর মোবাইলে ফোন করে মেম্বর প্রণব কুমার দৈহিক মেলামেশা করার জন্য নানা ধরনের কুপ্রস্তাব দিতে থাকে। সেসব কুপ্রস্তাবের কল রেকর্ড তার শ্বশুর মাখল লাল দাসকে শোনান এবং মেম্বর প্রণবকে মাখন দাস এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তাকে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে গুম এবং তার পুত্রবধূ ইতিরানী দাসকে এসিডদগ্ধ করার হুমকি দেয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ ব্যাপারে মিঠাখালী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর প্রণব কুমার মজুমদারের দাবি, “সব ষড়যন্ত্র, ওই কল রেকর্ড এডিট করা”।
তবে ইউনিয়নের চেয়রম্যান উৎপল কুমার মন্ডল বলেন, কল রেকর্ড শুনেছি। এটি মেম্বর প্রণবের কণ্ঠ। অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণভাবে তিনি যেসব কথা বলেছেন, তা নিয়ে মন্তব্য করার ভাষা আমার নাই”।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওই নারীর সঙ্গে মেম্বর প্রণব কুমার মজুমদারের যৌন হয়রানিমূলক একাধিক কল রেকর্ড এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। কিন্তু অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ হওয়ায় পাঠকের স্বার্থে এই প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি।
মোংলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদারও এই কল রেকর্ড শুনেছেন এবং লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে এবং এ কমিটির প্রতিবেদন হাতে পেলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এনএস//