পদ্মা সেতু চালু হতেই নামছে কয়েকশ বাস, বিনিয়োগ ৩শ কোটি টাকা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৪৬ পিএম, ৩ জুন ২০২২ শুক্রবার | আপডেট: ০৭:১৩ পিএম, ৩ জুন ২০২২ শুক্রবার
গৌরবের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনই শরীয়তপুর-ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে কয়েকশ নতুন বাস নামানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই এসি ও নন-এসি মিলিয়ে প্রায় তিনশ কোটি টাকার বিনিয়োগ করা হচ্ছে বলেও জানান শরীয়তপুরের ব্যবসায়ীরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শরীয়তপুরের নড়িয়া পৌরসভার মেয়র ও পরিবহন ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঢাকার কাছের জেলা শরীয়তপুর। কিন্তু পদ্মা পারের ঝুঁকি এড়াতে দুই জেলায় সরাসরি বাস বন্ধ রয়েছে প্রায় দুই দশক ধরে। সাধারণত নৌপথেই যাতায়াত করেন যাত্রীরা।
পদ্মা ট্রাভেলস নামে তার ১২টি বাস এখন ঢাকা-শিমুলিয়া রুটে পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল করছে জানিয়ে এই পরিবহন ব্যবসায়ী জানান, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনেই তিনি তার যাত্রী পরিবহন সার্ভিস আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করতে চান।
শরীয়তপুর সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক আহম্মেদ জানান, চলতি মাসের ২৫ তারিখ সেতু উদ্বোধনের দিনই ঢাকা-শরীয়তপুর রুটে বাস নামানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু বেপারী বলেন, “পদ্মা সেতু হওয়ায় পরিবহন ব্যবসায়ীরা শরীয়তপুর-ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বেশকিছু বাস চালানোর জন্য প্রায় তিনশ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন।”
তিনি জানান, “শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস, শরীয়তপুর ট্রান্সপোট, পদ্মা ট্রাভেলস, গ্লোরি এক্সপ্রেস-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসি ও নন-এনি বাস কেনা শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ভলভো, আইজার, অশোক লিলেন্ড, টাটা থেকে তারা এসব গাড়ি কিনছেন। শরীয়তপুর বাসস্ট্যান্ডসহ ঢাকার সাভার, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন ওয়ার্কশপে চলছে নতুন এসব বাসের বডি প্রস্তুতের কাজ।”
‘শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস প্রাইভেট কোম্পানি’ নামে একটি নতুন প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে উল্লেখ করে সমিতির সভাপতি ফারুক আহম্মেদ বলেন, এই কোম্পানিটি ঢাকার সঙ্গে সরাসরি বাস সার্ভিস দিতে এসি ও নন-এসি মিলিয়ে ৫০টি বাস সংগ্রহ বা তৈরি করছে।
এছাড়া শরীয়তপুরের পরিবহন কোম্পানিগুলো প্রাথমিকভাবে প্রায় তিনশ বাস তৈরি করছে জানিয়ে ফারুক আহম্মেদ বলেন, “এসব বাস প্রতি খরচ পড়ছে ৭০ লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত। জেলা শহর ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান, মিরপুর, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে চলবে এইসব যাত্রীবাহী বাস।”
যাত্রীবাহী পরিবহন সেবার এসব খবর ছড়িয়ে পড়েছে শরীয়তপুরের আনাচে-কানাচে। এতে স্থানীয় যাত্রীদের পাশাপাশি বিশেষ আনন্দিত এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা।
আলী আহমেদ নামে শরীয়তপুর জেলা শহরের একজন তেল ব্যবসায়ী সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সপ্তাহে অন্তত চারবার তাকে পথের দুর্ভোগ পোহাতে হয় এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌপথে ঢাকায় যাতায়াত করতে হয়।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তেল পরিবেশক এই ব্যবসায়ী বলেন, “এখন একইসঙ্গে সেতু এবং সরাসরি ভালো বাস চালু হলে দুই ঘণ্টাতেই নিরাপদে যেতে পারব বলে আশায় আছি।”
এছাড়া এই সেতু চালু হলে আন্তঃজেলা বাস সার্ভিসও চালু হবে বলে জানিয়েছেন শরীয়তপুর বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মাহবুব কামাল।
এদিকে, বহুলালোচিত ও চর্চিত পদ্মা সেতু চালু হওয়ার সাথে সাথেই দেশের অর্থনীতিতে দারুণ প্রভাব ফেলবে বলে মন্তব্য করেন শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান।
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর কারণে দুই শতাংশের ওপরে জিডিপি বাড়বে। এরইমধ্যে পরিবহন খাতসহ অন্য উন্নয়ন খাতে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।’
এনএস//