ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

লোকালয়ে আরও কন্টেইনার টার্মিনাল, আতঙ্কে মানুষ (ভিডিও)

হাসান ফেরদৌস, চট্টগ্রাম থেকে

প্রকাশিত : ১১:১৬ এএম, ৭ জুন ২০২২ মঙ্গলবার

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পর ভয়াবহ আগুনে হতাহতের ঘটনায় আতঙ্কে মানুষ। উপজেলার লোকালয়ে থাকা আরও তিনটি কন্টেইনার টার্মিনাল এবং ১১টি এলপিগ্যাস ও সিলিন্ডার কারখানা নতুন করে বাড়াচ্ছে শঙ্কা। বিস্ফোরণে বাতাসে ছড়িয়ে পড়া রাসায়নি মানুষের শরীরে আনছে নানা পরিবর্তনও। 

সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী বিএম কন্টেইনার ডিপোতে শনিবারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড এবং বিস্ফোরণের ঘটনায় পুরো এলাকা  ভারী হয়ে আছে পোড়া গন্ধে। অগ্নিকাণ্ডের কারণে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে হাইড্রোজেন পারক্সাইড নামের রাসায়নিক পদার্থ। সেই রাতের ভয়াবহতার কথা স্মরণ করে এখনও আঁতকে উঠেন স্থানীয়রা। বলেন, ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা। 

স্থানীয়রা বলেন, “বিস্ফোরণে ঘরে দরজা-জানালা সব ভেঙে গিয়েছে। বিল্ডিংয়ের শক্তপোক্ত গেট ভেঙ্গে পড়েছে। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছি।”

এদিকে, বাতাসে রাসায়নিক পদার্থ ছড়িয়ে পড়ায় এরই মধ্যে বিএম কন্টেইনার ডিপো এলাকায় বসবাসকারী সাধারণ মানুষের শরীরে নানা ধরনের পরিবর্তন দেখা দিয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, “চোখ-মুখ, শরীর জ্বলছে। গ্যাসের গন্ধের কারণে ঘুমাতে পারছি না।”

একই কথা বলছেন চিকিৎসকরাও। বাতাসে ছড়িয়ে পরা হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের কারণে নানা রোগ ব্যাধির আশংকা করছেন তারা।

সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মোহাম্মদ নুরুদ্দীন বলেন, “কেমিক্যাল ইনজুরিটার কাছে আসলে চোখ আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যেখানেই লাগবে তার ক্ষতি হবে। বিশেষ করে চামড়া ও ফুসফুসে সমস্যা বেশি দেখা দিতে পারে।”

ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ডে নতুন করে গড়ে উঠেছে সিলিন্ডার ও এলপি গ্যাস, বোতলজাত কারখানা। বসতবাড়ির মধ্যেই অনেকটা ঝুকিপূর্ণভাবেই হচ্ছে এসব কারখানা। প্রভাবশালীদের কারণে প্রশাসনও যথাযথ তদারকি করতে পারেন না। 

ঘনবসতি এলাকায় কন্টেইনার ডিপোসহ বিভিন্ন অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভিন্ন কলকারখানা গড়ে উঠায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। এলাকা থেকে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেয়ারও দাবি তুলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। 

সীতাকুণ্ড উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল্লাহ আল বাকের ভুইয়া বলেন, “

সংসদ সদস্য দিদারুল আলম বলেন, “বন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো, যে কোন কেমিক্যালের ক্ষেত্রে ঘনবসতি এলাকায় না রেখে অন্য জায়গায় ব্যবস্থা করা হোক। এখানে যে কন্টেইনাল স্ট্রেইক দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে কোন কেমিক্যালের, কোনটা কাপড়ের তা বোঝার কোন চিহ্ন নেই।”

বন্দরকে ঘিরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে ১৯টি ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো গড়ে উঠেছে। এসব কন্টেইনার ডিপোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অগ্নিনির্বাচন ব্যবস্থার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। বিএম কন্টেইনার ডিপোতে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে ভবিষ্যতে যাতে এসব ডিপোতে দুর্ঘটনা এড়ানো যায় সেসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

এএইচ