ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

সংসদে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট পেশ আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫৯ পিএম, ৮ জুন ২০২২ বুধবার | আপডেট: ১২:০৭ এএম, ৯ জুন ২০২২ বৃহস্পতিবার

ছবি-প্রতীকী

ছবি-প্রতীকী

২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট আজ বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের চতুর্থ বাজেট এটি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এবারে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট ধরা হয়েছে। এতে ঘাটতি রয়েছে প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা। এবারও দেশি-বিদেশি ঋণের ওপর নির্ভরতা বেড়েছে। ভর্তুকিতে থাকবে বড় বরাদ্দ। জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৭ শতাংশ। 

বাজেটে প্রাধিকার পাবে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ শিরোনামের এবারের বাজেট প্রস্তুত হয়েছে সরকারের অতীতের অর্জন এবং উদ্ভূত বর্তমান পরিস্থিতির সমন্বয়ে। 

এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই হবে বড় চ্যালেঞ্জ। সঙ্গত কারণেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কৃষি খাত, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ, কর্মসংস্থান ও শিক্ষা খাতসহ বেশ কিছু খাতকে। 

নিত্যপণ্যের উর্ধ্বগতি, টাকার ধারাবাহিক দরপতন, অস্থির বিশ্ববাজার। সাথে বেসামাল আমদানি-ব্যয়। আর এর বিপরীতে কম রপ্তানি-আয়, রেমিট্যান্সে ধীরগতি। এক কথায় খানিকটা চাপে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি।  

এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য রেকর্ড ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট দিতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। যা আগের বাজেটের চেয়ে ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি।  

বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যামাত্রা ধরা হচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। এরই মধ্যে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা এনবিআরকে আদায় করতে হবে। এনবিআর-বহির্ভুত খাত ১৮ হাজার কোটি টাকা এবং কর-ব্যতিত রাজস্ব থেকে আদায়ের লক্ষ্য ৪৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকার বিদেশি অনুদানের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। 

কিন্তু তারপরও নতুন বাজেটে ঘাটতি থাকছে ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। আর অনুদান বাদ দিলে ঘাটতি ছাড়াবে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। তবে সামগ্রিক ঘাটতি জিডিপির সাড়ে ৫ শতাংশ ছাড়াচ্ছে না। 

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, “হঠাৎ করে আয়-ব্যয় বেড়ে গেলে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে। সেজন্য বাজেট হবে সংযত বাজেট।”

এদিকে, বাজেট ঘাটতি পূরণে এবারও দেশি-বিদেশি ঋণের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। বিদেশি উৎস থেকে ৯৫ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা, স্থানীয় ব্যাংক-ব্যবস্থা থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি। এছাড়া ৩৫ হাজার কোটি টাকার সঞ্চয়পত্রসহ মোট ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক-বহির্ভুত ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকছে।  

বাজেট জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে সাড়ে ৭ শতাংশ। আর বৈশ্বিক অস্থিরতা সত্ত্বেও মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে লক্ষ্য রাখা হয়েছে।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, “মূল্যস্ফীতিটা সাধারণ মানুষের জন্য কষ্ট কর, দাম বাড়লে। এটা সরকারের চিন্তা-ভাবনায় যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেছে বাজেট প্রণয়নে।”

বাজেট উপস্থাপনের পরের দিন অর্থাৎ আগামী ১০ জুন (শুক্রবার) বিকেল ৩টায় ওসমানী মিলনায়তনে ২০২৩ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

বাজেটকে অধিকতর অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইট www.mof.gov.bd-এ বাজেটের সব তথ্য ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পাঠ ও ডাউনলোড করতে পারবে। একই সঙ্গে দেশ-বিদেশ থেকে ওই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফিডব্যাক ফরম পূরণ করে বাজেট সম্পর্কে মতামত ও সুপারিশ পাঠানো যাবে। প্রাপ্ত সব মতামত ও সুপারিশ বিবেচনা করা হবে।
কেআই//