বাবরের সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের রেকর্ড জয়
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৩৭ এএম, ৯ জুন ২০২২ বৃহস্পতিবার
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজেকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। বাবর আজমের সেঞ্চুরি ও খুশদিল শাহর ঝড়ো ইনিংসে সিরিজে এগিয়ে গেল পাকিস্তান।
মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৪ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরার উপলক্ষ জয়ে রাঙাল পাকিস্তান। এই মাঠে সবশেষ কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছিল ২০০৮ সালের এপ্রিলে, সেটিও ছিল ওয়ানডেতে; পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরেছিল বাংলাদেশ।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শাই হোপের সেঞ্চুরিতে আট উইকেট হারিয়ে ৩০৫ রানের বড় পুঁজি পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডেতে এই প্রথম তিনশ’ রান তাড়া করে জিতল পাকিস্তান। এর আগে ২০০৮ সালে আবু ধাবিতে ২৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয় ছিল আগের রেকর্ড।
এই সংস্করণে টানা তৃতীয় সেঞ্চুরিতে ১০৭ বলে ৯ চারে ১০৩ রানের ইনিংস খেলেন বাবর। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জেতেন তিনি। তবে, মাত্র ২৩ বলে ৪ ছক্কা ও একটি চারে অপরাজিত ৪১ রানের ইনিংস খেলে জয় নিশ্চিত করা খুশদিলের হাতে পুরস্কারটি তুলে দেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
জয়ে অবদান আছে ইমাম উল হক ও মোহাম্মদ রিজওয়ানেরও। ওপেনার ইমাম ৭১ বলে করেন ৬৫। ৬১ বলে ৫৯ রান করেন কিপার-ব্যাটসম্যান রিজওয়ান।
প্রথমে ব্যাট হাতে নেমে ১৩৪ বলে ১৫ চার ও ১ ছয়ে ১২৭ রানে করেন ক্যারিবিয়ান ওপেনার। শুরুতে ব্যাট করে কাইল মেয়ার্সকে দ্রুত হারালেও শেই হোপ আর শামরাহ ব্রুকসের ১৫৪ রানের জুটিতে পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পায় উইন্ডিজ।
১৫৪ রানের বড় জুটি ভাঙে ব্রুকসের বিদায়ে, মোহাম্মদ নওয়াজের বলে শাদাব খানের এক হাতে নেওয়া দুর্দান্ত ক্যাচে। নেদারল্যান্ডসে সবশেষ ম্যাচে অপরাজিত সেঞ্চুরি করা ব্রুকস এবার ৮৩ বলে ৭ চারে খেলেন ৭০ রানের ইনিংস।
ব্রুকসের বিদায়ের পর অবশ্য রান তোলায় মনোযোগ দেয় উইন্ডিজ। পরের দশ ওভারে দুটি উইকেট হারালেও রান উঠছিল ওভারপ্রতি ছয়েরও বেশি করে। তাতে চল্লিশ ওভার শেষে দলের রান দাঁড়ায় ২১৮।
ছয় উইকেট হাতে রেখে শেষ দশ ওভারে ঝড়ের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল উইন্ডিজ। শেষমেশ সেটা করেও ছেড়েছে। হোপ ইনিংসের ৪৫তম ওভারে ফিরলেও রোমারিও শেফার্ড আর রভম্যান পাওয়েলের ২০ বলে ৪১ রানের জুটি ৩০৫ রানের বড় এক জুটিই এনে দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
স্বাগকিতদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন হারিস রউফ।
৩০৬ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে ফখর জামানকে হারালেও ইমাম উল হক আর বাবরের কল্যাণে স্বাগতিকরা পায় দারুণ ভিত। দলীয় ১২৯ রানে ফেরেন ইমাম। এরপর মোহাম্মদ রিজওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানকে একটু একটু করে জয়ের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
পেয়ে যান টানা তিন ইনিংসের সেঞ্চুরিও। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ দুই ইনিংসে পেয়েছিলেন তিন অঙ্কের দেখা। ক্যারিয়ারে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার এই কীর্তি গড়লেন তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেটে যে কীর্তি নেই আর কারোর।
তবে এর পরই ছন্দপতন ঘটে তার। ইনিংসের ৪২তম ওভারে বাবর যখন ফিরছেন, জয় থেকে তখনও ৬৯ রানের দূরত্বে ছিল পাকিস্তান। বাবরের সঙ্গী রিজওয়ানও ফেরেন ফিফটির পর, পাকিস্তানের প্রয়োজন তখনো ৩২ বলে ৫০।
এর পরই শুরু খুশদিলের ঝড়ো ইনিংস। শেষ ২৪ বলে যখন দরকার ৪৪ রান, ৪৭তম ওভারে রোমারিও শেফার্ডকে টানা তিনটি ছক্কা হাঁকান খুশদিল। ওভারে আসে ২০ রান।
পরের ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে শাদাব খানকে ফিরিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ম্যাচে রাখেন আলজারি জোসেফ। তখন পাকিস্তানের ২ ওভারে চাই ২১। ৪৯তম ওভারে আবার ঝড় বয়ে যায় শেফার্ডের ওপর দিয়ে। এবার তাকে একটি করে চার-ছক্কা মারেন খুশদিল, আসে ১৫ রান।
আর শেষ ওভারে ৬ রানের প্রয়োজনে সিলসের দ্বিতীয় বল ছক্কায় উড়িয়ে জয় নিশ্চিত করেন নওয়াজ।
একই মাঠে শুক্রবার দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে সিরিজ বাঁচানোর চ্যালেঞ্জ।
এএইচ/