জয়-পরাজয় সবকিছুই নির্ভর করছে পশ্চিমাদের ওপর: ইউক্রেন
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:১৭ পিএম, ১০ জুন ২০২২ শুক্রবার
ভাদিম স্কিবিতস্কি
রণক্ষেত্রে রাশিয়ার বিরুদ্ধে হেরে যাচ্ছে ইউক্রেন এবং রুশ বাহিনীকে ঠেকিয়ে রাখতে তাদেরকে পশ্চিমা অস্ত্রের ওপর পুরোপুরি নির্ভর করতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন যুদ্ধাক্রান্ত দেশটির সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার উপ-প্রধান ভাদিম স্কিবিতস্কি।
শুক্রবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেছেন।
ভাদিম স্কিবিতস্কি বলেন, এটা এখন একটা কামান যুদ্ধে পরিণত হয়েছে। এখন আমরা যে রণক্ষেত্রে রয়েছি, তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে কামান এবং এই কামানের অভাবেই আমরা হেরে যাচ্ছি।
স্কিবিতস্কি বলেন, এখন সবকিছু নির্ভর করছে পশ্চিমারা আমাদের কী দিচ্ছে তার ওপর। ইউক্রেনের একটি কামানের বিপরীতের রাশিয়ার রয়েছে ১০ থেকে ১৫টি। আর রাশিয়ার যা আছে, তার মাত্র ১০ শতাংশ আমাদের দিয়েছে পশ্চিমা মিত্ররা।
ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার উপ-প্রধান বলেছেন, সৈন্যরা প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার কামানের গোলা ব্যবহার করছে। যার ফলে আমরা আমাদের কামানের গোলা প্রায় সব শেষ করে ফেলেছি। এখন আমরা ন্যাটো মানের ১৫৫-ক্যালিবার শেল ব্যবহার করছি।
ইউক্রেনীয় এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, যদিও ইউরোপ আমাদের নিম্নমানের শেল দিচ্ছিল। কিন্তু তাদের সরবরাহও ফুরিয়ে গেছে। দিন দিন পরিমাণ কমছে।
গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, প্রতিদিন ৬০ থেকে ১০০ জন ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হচ্ছে এবং আহত হচ্ছে আরও ৫০০ জনের মতো।
যদিও ইউক্রেন নিজেদের সেনাবাহিনীর হতাহতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত গোপন রেখে চলেছে।
রণক্ষেত্রে মোতায়েন হওয়া ইউক্রেনীয় সেনারাও দ্য গার্ডিয়ানের দেয়া একই চিত্রের কথা তুলে ধরেছেন।
সাক্ষাৎকারে স্কিবিতস্কি পশ্চিমাদের কাছে দূরপাল্লার রকেট ব্যবস্থা ইউক্রেনকে দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। যাতে করে দূরের লক্ষ্যবস্তুতে থাকা রুশ কামান ধ্বংস করা যায়।
সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের এক উপদেষ্টা ওলেক্সি আরেস্টোভিচ বলেছিলেন, ইউক্রেনের প্রয়োজন ৬০টি মাল্টিপল রকেট লঞ্চার। যদিও যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির তুলনায় এই সংখ্যা অনেক বেশি।
এদিকে, আগামী ১৫ জুন ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিতব্য এক বৈঠকে ন্যাটোর কন্টাক্ট গ্রুপের কাছে পশ্চিমা অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সামগ্রীর একটি তালিকা দিতে পারে ইউক্রেন। যা এই মুহূর্তে তাদের অতীব প্রয়োজন।
স্কিবিতস্কি মনে করেন, এই সংঘাত অদূর ভবিষ্যতেও কামান যুদ্ধ হিসেবে বজায় থাকবে। রুশ রকেট হামলার গতিও একই থাকবে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আক্রমণ শুরুর পর প্রথম দিকে ইউক্রেনে ক্রমাগত রকেট হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। কিন্তু গত দুই মাসে এমন হামলার সংখ্যা কমে এসেছে। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের মতে, রাশিয়া এখন দিনে ১০ থেকে ১৪টি রকেট নিক্ষেপ করছে।
স্কিবিতস্কি বলেন, আমরা লক্ষ্য করে রাশিয়া রকেট হামলা কমিয়ে দিয়েছে। এটি প্রমাণ করে রাশিয়ার রকেট কমে এসেছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে দ্রুত এগুলো উৎপাদন করতে পারছে না মস্কো। এই যুদ্ধে রুশরা তাদের রকেট মজুতের ৬০ শতাংশ ব্যবহার করে ফেলেছে।
এনএস//