ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

পদ্মাসেতু ঘিরে গণপরিবহন তৈরির ধুম পড়েছে (ভিডিও)

মুহাম্মদ নূরন নবী, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:২৩ পিএম, ১১ জুন ২০২২ শনিবার | আপডেট: ০৫:৩৬ পিএম, ২৪ জুন ২০২২ শুক্রবার

এতদিন ছিল নদী-পাড়াপাড়ের ঝক্কি-ঝামেলা। এখন আলো দেখাচ্ছে আশাজাগানিয়া পদ্মা সেতু। আরামদায়ক ভ্রমণ নিশ্চিতে উন্নতমানের বাসসহ গণপরিবহন তৈরির ধুম পড়েছে সুবিধাভোগী প্রত্যেকটি জেলায়। ওয়ার্কশপগুলোতে দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন নির্মাণ শ্রমিকরা।

এলিভেডেট এক্সপ্রেসওয়ে। ঢাকা থেকে মাওয়া কিংবা জাজিরা থেকে ভাঙ্গা। নিরবিচ্ছিন্ন কিন্তু দ্রুত গতিতে চলাচল। হাইডেফিনেশন রোর্ডগুলোতে বেশ আগে থেকেই স্বস্তির ভ্রমণ উপভোগ করছে দেশের মানুষ। 

সেটাতো পদ্মার দুই পাড়ের কথা। এবার, চালু হচ্ছে সেতু। সংযোগে আসছে নতুন মাত্রা। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল, ছুটবে গাড়ি সারিসারি। সময়ের পরিমাপে ব্যবধান কমবে দূরত্বের।

আশাজাগানিয়া সেতুর উন্মাদনা ছেয়ে যাচ্ছে পরিবহন সেক্টরের আনাচে-কানাচে। ওর্য়াকশপগুলোতে কর্মকৌশুলীদের যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। 

হাতে বিলাসবহুল বাস তৈরির কাজ। ২৫ তারিখের আগেই বুঝিয়ে দিতে হবে পরিবহন মালিকদের। 

আনুষ্ঠানিকভাবে যান চলাচলে পদ্মাসেতু উন্মুক্ত হবার খবরে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় সব জেলায় বিলাসবহুল বাস তৈরির অনেকটা ধুম পড়ে গিয়েছে। এতদিন নদী পারাপারের কারণে পরিবহন ব্যবসা মন্দা ছিল। কিন্তু সেতুতে গাড়ি চলাচল করতে পারবে বলে এই ব্যবসায় চাঙ্গা ভাব ফিরে আসবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। সেই সাথে ব্যবসার ধারা বদলে যাত্রীদের সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য সব রকমের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

কারিগররা জানান, “পদ্মা সেতু চালু উপলক্ষে বানান হচ্ছে। সব লাইটিং, ভেতরের ডেকারেশন সব কিছুই অন্য রকমের, বাইরের দেশের সিস্টেমের মত।”

স্বপ্নের সেতুতে চলাচল-উপযোগী মানসম্মত বাস নির্মাণে টাকা খরচে কাপর্ণ্য করছেন না কেউই। যন্ত্রাংশ সরবরাহে কিছুটা সংকট তৈরি হলেও, সময়মতো সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে বলে আশাবাদী কারিগররা। 

কারিগররা জানান, “বর্তমানে ইন্ডিয়া থেকে মানসম্মত চেচিস আসছে না। ”

পরিবহন খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের আভাস দিলেন এই পরিবহন ব্যবসায়ী। জানালেন ভলভো, স্ক্যানিয়া, হুন্দাই, আইচার, অশোক লেল্যান্ড ও টাটার চেচিস কিনে তৈরি হচ্ছে বাসের বডি।

নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল মাতলুব আহমেদ বলেন, “কানেক্টিভিটির জন্য নতুন বাস চলে আসবে, সাক্সারী বাস আসবে। টাটা কোম্পানির মেলা করেছি, বেশ সাড়া পাচ্ছি।”

কমপক্ষে ১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি হয়েছে পরিবহন খাতে। তবে, খাতটির বিকাশে সঠিক পরিকল্পনা জরুরি বলেও মত বিশ্লেষকদের।

পরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, “ব্রিজের সাথে সম্পূর্ক যে বিনিয়োগটা হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম এক্সপ্রেস ওয়ে। আমরা কিন্তু এখনও ফোর-ফরটি বোল্ডের মাপের যে এক্সপ্রেস ওয়ের ঝুঁকি সেটা জানিই না। কারণ নসিমন-করিমন-ভটভটির চালাতে চালাতে যে মানসিকতাটা হয়েছে যে আমি ম্যানেজ করে চলে যাব।”

আবুল মাতলুব আহমেদ বলেন, “সবচেয়ে বড় অ্যাফেক্টেট হবে ট্রান্সপোর্ট। তার মধ্যে সবচেয়ে ফাস্টেট গেইন করবে বাস, তারপরে গাড়ি , এর পরে আছে ট্রাক।”

এরইমধ্যে, দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর সাথে টোলসহ বাস ভাড়ার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সড়ক বিভাগ। বাড়তি ভাড়ার নৈরাজ্য যাতে চেপে না বসে সেদিকে নজর দেয়ারও পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের। 

এএইচ